রাজনীতি

যুবদল নেতা নয়নকে নিয়ে বিব্রত বিএনপি

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে দখল, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে এ পর্যন্ত বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর অন্তত ৮০ জন নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে পদে বহাল রয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন। রবিউল ইসলাম নয়নকে বহিষ্কার না করায় দলের বিভিন্ন পর্যায়ে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। বিব্রত-বোধ করছেন সিনিয়র নেতারাও।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রবিউল ইসলাম নয়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় দখলের চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি। এস আলম গ্রুপের হয়ে ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় দখলের চেষ্টা করেন নয়ন ও তার অনুসারীরা। ব্যাংক দখলের চেষ্টাকালে তিনি আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার করেছেন। তার ছোড়া গুলিতে ব্যাংকের ৬ কর্মকর্তা আহত হয়। এছাড়া একটি বেসরকারি টেলিভিশন দখলের চেষ্টা করেন নয়ন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুবদলের একজন শীর্ষ নেতা জাগো নিউজকে বলেন, অপরাধের দায়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিলকিস আক্তার জাহানের (শিরিন) পদ স্থগিত করেছে দল। বিভিন্ন জায়গায় লঘু অপরাধে নেতাকর্মীদের বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়নকে বহিষ্কার করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দলকে। কারণ তিনি বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলের ঘনিষ্ঠজন। আর রকিবুল ইসলাম বকুল দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে পরিচিত।

এ বিষয়ে কথা বলতে রকিবুল ইসলাম বকুলকে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Advertisement

যুবদল সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেন, যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়নের ইসলামী ব্যাংক দখলের চেষ্টার বিষয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি না। দীর্ঘ ৯ বছর পর গতকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ দেশে ফিরেছেন। তাকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে ছিলাম। পরে বিষয়টি শুনেছি। দখল ও চাঁদাবাজিসহ অনৈতিক অসামাজিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। বিষয়টি খোঁজখবর নিচ্ছি। প্রমাণসাপেক্ষে সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভিন্ন অভিযোগে এ পর্যন্ত আমরা অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছি।

তিনি আরও বলেন, সংগঠনের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যারা যুবদলের নামে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকবে তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তুলে দেবেন এবং অমাদের অবগত করবেন।

বিএনপি নেতারা বলছেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলের কেউ যেন হামলা ভাঙচুর ও লুটপাটে না জড়ায়। একই সঙ্গে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মন্দির, গির্জায় কোনো ধরনের সহিংসতা না হয়, পাহারা দিতে বলা হয়। তাদের দাবি অধিকাংশ জায়গায় দুষ্কৃতকারীরা এসব ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপির ওপর দোষ চাপাচ্ছে।

গত ৭ আগস্ট নয়াপল্টনে বিএনপির পক্ষ থেকে যে সমাবেশ হয় তাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রতিশোধের পথ পরিহারের আহ্বান জানান।

Advertisement

বিএনপির মহাসচিবের ভাষ্যমতে, কিছু কিছু জায়গায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। কিছু দুষ্কৃতকারী এসব করে বিএনপির নাম ভাঙায়। অনেক জায়গায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ধরা পড়েছে। তাদের নাম এসেছে।

কেএইচ/এমএএইচ/এমএস