দেশজুড়ে

লাপাত্তা পৌর মেয়রসহ কাউন্সিলররা, বিপর্যস্ত নাগরিক সেবা

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপরই ঝালকাঠি পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলররা আত্মগোপনে চলে গেছেন। গত সাতদিন থেকে তারা সবাই লাপাত্তা থাকায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পৌর এলাকার নাগরিক সেবা কার্যক্রম।

Advertisement

তবে সচিব জানান, মেয়র-কাউন্সিলরদের উপস্থিতির ডকুমেন্টের জন্য হাজিরা খাতা নেই। কারা পৌরসভায় আসলো আর কারা আসলো না, সেটা খেয়াল করার সুযোগও পাই না। তবে তারা কোনো কারণে অনুপস্থিত থাকলেও নাগরিক সেবা খুব বেশি বিঘ্নিত হবে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২১ জুন ঝালকাঠি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয়বারের মতো নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন নিয়ে বিজয়ী হন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি লিয়াকত আলী তালুকদার। সেইসঙ্গে ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ ও সংরক্ষিত মিলিয়ে ১২ জন পৌর কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।

গত সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই লাপাত্তা রয়েছেন মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার। আত্মগোপনে রয়েছেন ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রেজাউল করিম জাকির, ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আল মাহমুদ, ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এসএম আলআমিন, ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল শরীফ, ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরুণ কর্মকার, ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস, ৫ বার নির্বাচিত ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিল, ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের ঘনিষ্ঠজন হুমায়ুন কবীর সাগর। এছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১, ২, ৩নং ওয়ার্ডে তাসলিমা বেগম, ৪, ৬, ৭নং ওয়ার্ডে সাবিনা ইয়াসমিন ও ৫, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের মালা বেগম। ৫ আগস্ট থেকে পৌর পরিষদে এদের কাউকে উপস্থিত দেখা যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে পৌর এলাকার সকল নাগরিকসেবা চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।

Advertisement

তবে মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঢিলেঢালাভাবে পৌরভবনে উপস্থিত ছিলেন। রোববার (১১ আগস্ট) উপস্থিত থাকলেও সেবাগ্রহিতার সংখ্যা খুবই কম ছিল। ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আ. কুদ্দুস ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর তাসলিমা বেগম রোববার ১২টার দিকে পৌরসভায় গিয়ে নাগরিকদের খোঁজ খবর নেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ওইদিন এমপি আমির হোসেন আমুর বাড়ি পুড়িয়ে ভস্মীভূত করে দেয় দুর্বৃত্তরা। লুট করে নিয়ে গেছে সবকিছুই। এছাড়াও বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার বাসভবন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসবের কারণেই মেয়র, কাউন্সিলররা কেউ পৌর পরিষদে যাচ্ছেন না।

বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে শহরবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েকদিনে পৌরবাসীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম, জরুরি সেবা ও ওয়ার্ডভিত্তিক বিভিন্ন নাগরিক সেবা চরমভাবে ভেঙে পড়েছে।

কৃষ্ণকাঠি এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার এলাকার রাস্তায় যে সড়কবাতিগুলো রয়েছে সেগুলো কয়েকদিন থেকে জ্বলছে না। একেবারে ভুতুড়ে অবস্থা বিরাজ করছে। এমনিতেই মাঠে পুলিশ নেই তার ওপর আবার অন্ধকার। সঙ্গত কারণে এলাকায় ছিনতাই-চুরি ও লুটপাট বেড়ে গেছে।

Advertisement

মো. আতিকুর রহমান/এফএ/জেআইএম