বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন সবচেয়ে আলোচিত হওয়ার কথাই ছিল। তবে সেটা যে এতটা আলোড়ন তৈরি করবে তা কে ভেবেছিল। মাত্র তিন-চারদিন আগেও বিরাজ করছিল কিছুটা নিরুত্তাপ পরিস্থিতি। হঠাৎই দাবার গুটির মত ছক বদলে যেতে শুরু করে। দু’দিন আগে বদলে যায় পরিবেশ পরিস্থিতিও। কাজী সালাউদ্দিনের সম্মিলিত পরিষদের অনেককেই দেয়া হচ্ছিল হুমকি। যে কারণে নির্ধারিত একটি অনুষ্ঠানও বাতিল করতে হয়েছে তাদেরকে। পরেরদিন বাঁচাও ফুটবল প্যানেল ঘটা করে আয়োজন করে প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠান। সব মিলিয়ে শ্বাসরূদ্ধকর পরিস্থিতিতে অনু্ষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাফুফের আলোচিত এই নির্বাচন।কে হচ্ছেন আগামী চার বছরের জন্য বাফুফের কাণ্ডারী? কাজী সালাউদ্দিন নাকি কামরুল আশরাফ খান (পোটন) এমপি? এই দু`জনের মধ্যেই লড়াই হবে বাফুফের শীর্ষ আসনটির। ব্যালটে চারজনের নাম থাকলেও সভাপতি নির্বাচনে লড়াই হবে মূলতঃ এ দু`জনের মধ্যেই। বাকি দু`জন আগেই নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বীতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।দুই প্রার্থীরই নেতৃত্বে রয়েছে দুটি প্যানেল। কাজী সালাউদ্দিনের সম্মিলিত পরিষদ এবং নরসিংদী-২ আসনের এমপি কামরুল আশরাফ খানের নেতৃত্বে বাঁচাও ফুটবল পরিষদ। দুই পরিষদের বাইরে বেশ কয়েকজন প্রার্থী এককভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে ইতিমধ্যে ঢাকায় পৌছেছেন এএফসির প্রতিনিধি। দেশের ক্রীড়ামোদীদের নজর এখন বাফুফে নির্বাচনে-কারা আসছেন আগামী ৪ বছরের জন্য।কাজী মো. সালাউদ্দিন ফুটবলে সবেচেয়ে পরিচিত মুখ। টানা দুই মেয়াদ তিনি বাফুফে সভাপতি। আর কামরুল আশরাফ খান ফুটবল অঙ্গনে নতুন মুখ। নির্বাচনী মাঠেও তিনি নেমেছেন শেষ মুহুর্তে। সবচেয়ে বড় কথা কোন জেলা পর্যায় থেকে এই প্রথম কেউ বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি প্রতিদ্বন্দ্বীতায় সামনের সারিতে চলে এসেছেন।যদিও দেশের দুই বড় ক্লাব মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের ডাইরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভুঁইয়া ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সভাপতি মঞ্জুর কাদেরসহ বেশ কয়েকজন সাকেব ফুটবলারের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নামায় অতি অল্প সময়ে কাজী মো. সালাউদ্দিনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছেন কামরুল আশরাফ খান এমপি। এখন পর্যন্ত যা অবস্থা তাতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাসই মিলছে। র্যাডিসন হোটেলের ব্লু গার্ডেনে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। ভোটার (ডেলিগেট) সংখ্যা ১৩৪। ভোট গ্রহণের আগে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)।২১ সদস্যের নির্বাহী কমিটিতে মূল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সভাপতি পদ। কেননা ফিফা আইনে সভাপতিই হচ্ছেন ফুটবল ফেডারেশনের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। নির্বাচনের মাঝপথেই সভাপতি পদে সরে দাঁড়ান দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানী হেলাল এবং নুরুল ইসলাম নুরু। হেলাল সমর্থন করেছেন সালাউদ্দিনকে এবং নুরু সমর্থন করেন পোটনকে।নির্বাচন ঘিরে তৈরি হয়েছে টানটান উত্তেজনা। সেই সঙ্গে অর্থের ছড়াছড়ি। ভোটাররা আছেন মহা আনন্দে। দুই পক্ষই ভরিয়ে দিচ্ছে পকেট। তবে ভয়ভীতির বিষয়ও আছে। নির্বাচন উপলক্ষে হোটেল র্যাডিসনে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা।নির্বাচনে প্রার্থীসভাপতি : কাজী মো. সালাউদ্দিন, কামরুল আশরাফ খান পোটন।সহ-সভাপতি : কাজী নাবিল আহমেদ, বাদল রায়, সামশুল হক চৌধুরী, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, খুরশিদ আলম বাবুল, আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু, নজিব আহমেদ, একেএম মমিনুল হক সাঈদ, তাবিথ আউয়াল এবং শেখ মুহাম্মদ মারুফ হাসান।সদস্য: হারুনুর রশীদ, আমিরুল ইসলাম বাবু, সত্যজিৎ দাশ রূপু, ফজলুর রহমান বাবুল, ইলিয়াছ হোসেন, মাহফুজা আক্তার কিরণ, শওকত আলী খান জাহাঙ্গীর, মাহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম, আব্দুর রহিম, জাকির হোসেন চৌধুরী, অমিত খান শুভ্র, সালেহ্ জামান সেলিম, আরিফ হোসেন মুন, আলমগীর খান আলো, তৌফিকুল ইসলাম তোফা, নওশের উজ্জামান, শেখ মো. আসলাম, আব্দুল গাফ্ফার, আবু হাসান চৌধুরী প্রিন্স, আজফার উজ জামান খান সোহরাব, হাজী মো. টিপু সুলতান, কামরুন নাহার ডানা, সৈয়দ রুম্মন বিন ওয়ালিদ সাব্বির, কায়সার হামিদ, ইমতিয়াজ সুলতান জনি, বিজন বড়ুয়া, আমের খান, মো. ইকবাল হোসেন, মো. হাসানুজ্জামান খান বাবলু, মো. সাইফুর রহমান মনি, হাজী মো. টিপু সুলতান, মোঃ ইকবাল হোসেন, আসাদুজ্জামান মিঠু।
Advertisement
আইএইচএস/এনএফ