অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকেই রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু করে দেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সড়কের নানান অসঙ্গতি চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালালে তাদের আটকিয়ে শাস্তি দিচ্ছেন তারা। ফলে শাস্তির ভয়ে হেলমেট ছাড়া সড়কে বের হচ্ছেন না মোটরসাইকেল চালকরা। এতে বেড়েছে হেলমেট বিক্রি।
Advertisement
২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে চলা আন্দোলনের পরও বাইক চালকদের মধ্যে বেড়েছিল হেলমেট পরার বিষয়ে সচেতনতা। তার রেশ গিয়ে ঠেকেছিল রাজধানীর হেলমেটের বাজারেও। ওই সময় বিক্রি ব্যাপক বেড়েছিল। এবার অবশ্য বিক্রি ততটা বাড়েনি। তবে বিগত কয়েক বছরের তুলনায় হেলমেট বিক্রি বেড়েছে।
ঢাকার মালিবাগ, বাংলামোটর ও বংশাল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আগের চেয়ে হেলমেটের দোকানে ভিড় বেশি। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বিক্রি বেড়েছে।
মালিবাগে মোটো চেইন নামের এক দোকানে কথা হয় ফুয়াদ হাসান নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, গতকাল সহযাত্রীর (আরোহী) হেলমেট না থাকায় রাস্তায় সাজা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সেজন্য হেলমেট কিনতে এসেছি। নিজের হেলমেট থাকলেও আরেকজনের জন্য বাড়তি হেলমেট আগে রাখতাম না। মাঝেমধ্যে কেউ উঠলে সেভাবেই চড়তো। কিন্তু এখন আর (হেলমেট ছাড়া) যাওয়া যাচ্ছে না।
Advertisement
মোটরসাইকেল চালানোর সময় চালক ও আরোহীদের হেলমেট ব্যবহারে বাধ্যবাধকতা থাকলেও আরোহীর ক্ষেত্রে সে আইন বেশিভাগ মানুষ মানতো না। কিন্তু এখন চালকদের পাশাপাশি আরোহীদের হেলমেট পরতে হচ্ছে।
মা আটো পার্টসের শাহিন হোসেন বলেন, আগে রাস্তায় কড়াকড়ি হলে হেলমেট কেনার হিড়িক পড়ে যেত। এখন চাপ বেড়েছে, কিন্তু অনেকের হেলমেট আছে। যে কারণে আগের কড়াকড়ি সময়ের মতো বিক্রি না বাড়লেও স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এখন বিক্রি বেশি।
বিক্রেতারা বলছেন, এখন আরোহীর হেলমেটের চাহিদা বেশি। দেশের বাজারে প্রায় ২০টি ব্র্যান্ডের অর্ধশতাধিক মডেলের হেলমেট পাওয়া যায়। তবে সব হেলমেট মানসম্পন্ন নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হেলমেটের নামে যা বিক্রি হয়, তা প্লাস্টিকের বাটির মতো। এসব হেলমেট ২০০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা দামে পাওয়া যায়। যেগুলো আরোহীরা ব্যবহার করেন, সেসব হেলমেট এখন বেশি বিক্রি হচ্ছে।
বংশালের এসবি ট্রেডার্সের রুকোনুজ্জামান রোকন বলেন, বিক্রি বেড়েছে ঠিক, তবে কমদামি হেলমেটের চাহিদা বেশি।
Advertisement
তিনি বলেন, আগে যেখানে আমাদের প্রতিদিন হেলমেট বিক্রি হতো দেড় থেকে দুই হাজার পিস। এখন সেখানে আড়াই হাজার পিসের মতো বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ কিছুটা বেশি। তবে ঢাকার বাইরে থেকেও এখন হেলমেটের বাড়তি চাহিদা আসছে।
তথ্য বলছে, দেশে বছরে মোটরসাইকেলের হেলমেট বিক্রি হয় তিন লাখ পিসের বেশি। এতদিন চাহিদার প্রায় পুরোটাই আমদানি করে মেটানো হতো। এখন দেশেই হেলমেট উৎপাদন শুরু হয়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী প্রাণ-আরএফএলের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান আরএফএল প্লাস্টিকস লিমিটেড নরসিংদীর ঘোড়াশালে প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে হেলমেট তৈরি করছে।
এনএইচ/কেএসআর/জিকেএস