সীমান্ত পার হয়ে রাশিয়ার ভূখণ্ডে ইউক্রেনীয় সেনাদের বড় ধরনের হামলা করার কথা স্বীকার করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম রাশিয়ার পশ্চিমে কুরস্ক অঞ্চলের ২০ কিলোমিটার অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী। সেখানে বর্তমানে হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সৈন্য রুশ সৈন্যদের বিরুদ্ধে ব্যাপক যুদ্ধ করছে। শনিবার (১০ আগস্ট) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব তথ্য জানান জেলেনস্কি।
Advertisement
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, রুশ ভূখণ্ডের ভেতরে ইউক্রেন তার অভিযান শুরু করার পাঁচ দিন পরে জেলেনস্কির পক্ষ থেকে এই স্বীকারোক্তি সামনে এসেছে। ইউক্রেনীয় এই আক্রমণ রাশিয়াকে কার্যত অবাক করে দিয়েছে ও সীমান্তের উভয় পাশ জুড়ে জনসাধারণকে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও সুমি অঞ্চলে রোববার (১১ আগস্ট) ভোরে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেছেন, আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলো সক্রিয় রয়েছে ও শহরে বিমান হামলার সতর্কতা অব্যাহত রয়েছে। টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে দেওয়া বার্তায় তিনি বেসামরিক নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে সতর্ক করেছেন। এছাড়া কিয়েভসহ এর আশপাশের অঞ্চল ও পূর্ব ইউক্রেনের পুরোটাই বিমান হামলার সতর্কতার অধীনে রয়েছে।
এছাড়া শনিবারের ভাষণে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইউক্রেনের ‘যোদ্ধাদের’ ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, সিনিয়র সামরিক কমান্ডার ওলেক্সান্ডার সিরস্কির সঙ্গে রাশিয়ায় অভিযান নিয়ে আলোচনা করেছি। ইউক্রেন প্রমাণ করছে, তারা প্রকৃতপক্ষে ন্যায়বিচার পুনরুদ্ধার করতে পারে ও আক্রমণকারীর ওপর প্রয়োজনীয় চাপ নিশ্চিতও করতে পারে।
Advertisement
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনীয় সৈন্যরা রাশিয়ার অভ্যন্তরে ১০ কিমি (ছয় মাইল) এরও বেশি এলাকাজুড়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আঞ্চলিক একটি শহরও দখল করার চেষ্টা করছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণ-মাত্রায় রুশ আক্রমণ শুরু করার পর থেকে এটিই এখন পর্যন্ত ইউক্রেনীয় বাহিনীর সবচেয়ে বড় অগ্রগতি।
এছাড়া রোববার মাঝরাতে কুরস্কে কমপক্ষে ১৩ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েয়ছেন এই অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর আলেক্সি স্মিরনভ। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় তাস নিউজ এজেন্সি অনুসারে, এরই মধ্যে সীমান্ত এই এলাকা থেকে ৭৬ হাজারেরও বেশি লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গভর্নর স্মিরনভ রোববার বলেন, তিনি কর্মকর্তাদের বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য অভিযান ত্বরান্বিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
রাশিয়া বলেছে, ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানসহ ইউক্রেনের এক হাজার সৈন্য গত মঙ্গলবার সকালে কুরস্ক অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। এরপর থেকে ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা বেশ কয়েকটি গ্রাম দখল করেছে এবং আঞ্চলিক শহর সুদজা দখল করে নেওয়ার হুমকি সৃষ্টি করেছে বলেও জানা গেছে। তবে সেখানে রুশ সেনারা সর্বোচ্চ প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স
Advertisement
এসএএইচ