অগ্নিকাণ্ডে ধ্বংস হওয়া কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আহ্বানে শুক্রবার (০৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে ওসি মোহাম্মদ মাহফুজুল হক চৌধুরী অগ্নিকাণ্ডে ধ্বংস হওয়া থানা ও তার বাসভবনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শনে গেলে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
Advertisement
এর আগে গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনের সময় দুর্বৃত্তরা কুষ্টিয়া মডেল থানা ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে থানা, সার্কেল অফিস ও ওসির বাসভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
গত বুধবার (৭ আগস্ট) দিনব্যাপী সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা থানা চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে পুলিশকে পুনরায় থানায় এসে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনার আহ্বান জানায়। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ওসি থানা পরিদর্শনে যান।
এ সময় উপস্থিত থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক তৌকির আহমেদ বলেন, পুলিশ আমাদের পরম বন্ধু। এই ধ্বংসযজ্ঞ কোনো কিশোর গ্যাংয়ের কাজ হতে পারে, আবার ১৫ বছরের যে আক্রোশ তার ক্ষোভের জায়গা থেকেও হতে পারে৷
Advertisement
তিনি বলেন, এমন ধ্বংসযজ্ঞ চালালে সাধারণ মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত থাকবে। এজন্য কিন্তু আমরা কোটা সংস্কার থেকে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন করিনি। গত ১৫ বছর সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগের কাছে জিম্মি ছিল। এই আন্দোলনের মাধ্যমে তারা বাক স্বাধীনতা পেয়েছে। এরপর আর অন্য কোনো দল এই জিম্মিদশা করতে পারবে না।
তিনি বলেন, গত ৫ তারিখে আন্দোলন চলাকালীন তৃতীয় কোনো পক্ষ থানা, সার্কেল অফিস ও ওসির বাসভবন ভাঙচুর করেছে এবং পুড়িয়ে দিয়েছে। যার ফলে অস্ত্র, গোলাবারুদ, আসবাবপত্রসহ সরকারি নথিপত্র পুড়ে গেছে৷ এগুলো আমাদের টাকার ভ্যাট ট্যাক্স দিয়েই কেনা হয়৷ সেনাবাহিনীর পাশাপাশি যদি পুলিশও মাঠে থাকতো তাহলে জনগণের জান মালের নিরাপত্তা থাকতো। এ সময়টাতে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ মাঠে থাকাটা খুবই জরুরি। তাই আমরা পুলিশদের পুনরায় থানায় ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছি। নতুন করে বরণ করে নিয়েছি।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন,পুলিশ জনগণের বন্ধু। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কুষ্টিয়া মডেল থানা, সার্কেল অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। মূলত এরপর থেকেই পুলিশ কর্মবিরতি ঘোষণা করে। বর্তমানে সমস্ত জায়গায় এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তৃতীয় পক্ষ হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট শুরু করেছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সমন্বয়করা আমাদের পুনরায় থানা পরিচালনা করে আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে। এই মুহূর্তে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ দাবি আদায়ের আন্দোলন চলছে। সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা পেলে আমরা আবারো থানায় ফিরে আসবো। আল-মামুন সাগর/এফএ/এএসএম
Advertisement