শরিয়ত আবশ্যক করেনি এমন নফল কোনো আমল নিজের ওপর আবশ্যক করে নেওয়াকে ‘নজর’ বা মানত বলে। মানত শর্তযুক্ত ও শর্তমুক্ত হতে পারে। কেউ যদি বিশেষ উদ্দেশ্য পূরণের শর্তে কোনো আমল করার প্রতিজ্ঞা করে, তাহলে তা শর্তযুক্ত মানত। শর্ত ছাড়া কোনো আমল নিজের ওপর আবশ্যক করে নিলে তাও মানত হিসেবে গণ্য হয়।
Advertisement
মানত করলে তা পূর্ণ করা ওয়াজিব। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন,
ثُمَّ لۡیَقۡضُوۡا تَفَثَهُمۡ وَ لۡیُوۡفُوۡا نُذُوۡرَهُمۡ وَ لۡیَطَّوَّفُوۡا بِالۡبَیۡتِ الۡعَتِیۡقِ
তারপর তারা যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়, তাদের মানতসমূহ পূরণ করে এবং প্রাচীন ঘরের তাওয়াফ করে। (সুরা হজ: ২৯)
Advertisement
আরেক আয়াতে আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের বর্ণনায় বলেছেন,
یُوۡفُوۡنَ بِالنَّذۡرِ وَ یَخَافُوۡنَ یَوۡمًا کَانَ شَرُّهٗ مُسۡتَطِیۡرًا
তারা মানত পূর্ণ করে এবং সেদিনকে ভয় করে যার অকল্যাণ হবে ব্যাপক। (সুরা দাহর: ৭)
কেউ যদি টাকা দান করার মানত করে এবং মানত করার সময়ই খাত নির্ধারণ করে যেমন ‘অমুক কাজটি হলে আমি এত টাকা মসজিদে দান করবো’ বা ‘দরিদ্রদের দান করবো’ বলে মানত করে, তাহলে মানতের টাকা সে অনুযায়ী দান করতে হবে।
Advertisement
আর যদি মানতের সময় খাত নির্ধারণ করা না হয়, শুধু ‘এত টাকা সদকা করবো’ বলে মানত করা হয়, তাহলে তা জাকাতের খাতে দান করতে হবে অর্থাৎ জাকাত গ্রহণ করার উপযুক্ত দরিদ্র কোনো ব্যক্তিকে দিতে হবে। এ রকম মানতের টাকা মসজিদে দান করা যাবে না।
মাজারে টাকা দেওয়ার মানত করলে কি তা পূরণ করতে হবে?মানত পূরণ করা ওয়াবিজ হওয়া বা মানতটি গ্রহণযোগ্য হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো, কোনো নেক কাজের মানত করতে হবে, মানতকৃত কাজটি কোনো গুনাহ বা গুনাহের কারণ হতে পারবে না। তাই কেউ যদি শিরক বিদআত হয় এমন কোনো মাজারে টাকা দান করার মানত করে, তাহলে এটা গুনাহের কাজ হওয়ায় তা পূরণ করা ওয়াজিব নয়, বরং ওই মানত পূরণ না করা জরুরি। রাসুল (সা.) বলেছেন,
مَنْ نَذَرَ أَنْ يُطِيعَ اللهَ فَلْيُطِعْهُ، وَمَنْ نَذَرَ أَنْ يَعْصِيَهُ فَلاَ يَعْصِهِ.
কেউ ভালো কাজের মানত করলে সে যেন তা পূর্ণ করে। আর কেউ গুনাহের মানত করলে সে যেন তা পূর্ণ না করে। (সহিহ বুখারি: ৬৬৯৬)
ওএফএফ/জিকেএস