দেশজুড়ে

গাইবান্ধায় আত্মগোপনে আ’লীগের এমপিরা, ভেঙে গেছে নেতাকর্মীদের মনোবল

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুরে দেশত্যাগ করেন তিনি। এরপর থেকে আতঙ্কে রয়েছেন দলটির নেতাকর্মী ও মন্ত্রী-এমপিরা। একই অবস্থা গাইবান্ধাতেও।

Advertisement

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর চলমান পরিস্থিতিতে আত্মগোপনে চলে গেছেন জেলার আলোচিত নেতারা। অভিভাবকশূন্য সংকটময় এ দিনগুলোতে বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তাদের কর্মী-সমর্থকরা। একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সবশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদে গাইবান্ধা জেলার সংসদীয় পাঁচটি আসনের সব কয়েকটিতে আধিপত্য ছিল আওয়ামী লীগের। তবে শেখ হাসিনার পতনের পর তাদের কেউ পালিয়ে গেছেন বিদেশে। কেউবা রয়েছেন আত্মগোপনে। আত্মগোপনে রয়েছেন দলের ছোট-বড় সব নেতাকর্মী।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আত্মগোপনে চলে গেছেন গাইবান্ধা-১ আসনের স্বতন্ত্র এমপি নাহিদ নিগার। তার মা সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এমপি শাহ সরোয়ার কবিরও লাপাত্তা রয়েছেন। অনেকের ধারণা, তিনি শহরে বিএনপি-জামায়াতের কোনো আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন। জেলার অনেক নেতার বাড়িঘরে হামলা হলেও এমপি সরোয়ারের বাড়ি রয়েছে অক্ষত। সাবেক হুইপ মাহবুব আরা গিনিরও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।

Advertisement

গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ী-সাদুল্লাপুর) আসনে কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতিও এখন লাপাত্তা। তিনি এখন কোথায় রয়েছেন জানেন না স্থানীয় নেতারা। তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, তিনি গাইবান্ধায় কোনো আত্মীয়ের বাসায় রয়েছেন। বিক্ষুব্ধ জনতা তার নগরীর বাসায় হামলা ও ভাঙচুর করেছেন।

গাইবান্ধা-৪ গোবিন্দগঞ্জ আসনের এমপি আবুল কামাল আজাদও নেতাকর্মীদের রেখে নিরাপদ স্থানে রয়েছেন। এখন পর্যন্ত তাকে মাঠে দেখেননি তার কর্মী-সমর্থকরা। তার বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন নেতাকর্মীদের বিপদে রেখে রোববার (৪ আগস্ট) সপরিবার উড়াল দেন যুক্তরাষ্ট্রে তার শ্বশুরের কাছে। অথচ আতঙ্কে রয়েছেন এলাকার নেতাকর্মীরা।

শুধু এমপিরাই নয়; জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতাকর্মীই রয়েছেন আত্মগোপনে। তাদের ফোনও বন্ধ রয়েছে। এ কারণে কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Advertisement

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার প্রতি তৃণমূলের কর্মীদের এতদিন যে আস্থা ছিল, তা এখন আর নেই। তাদের কেউই কল্পনা করতে পারেননি শেখ হাসিনা এভাবে দেশত্যাগ করবেন। এমন পরিস্থিতিতে তাদের মনোবল ভেঙে গেছে। একইসঙ্গে শেখ হাসিনা যে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হবেন, সেটাও কেউ কোনোদিন কল্পনা করতে পারেননি।

গাইবান্ধা নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু জাগো নিউজকে বলেন, ‘স্বৈরশাসক দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে জনগণকে কোনঠাসা করে রেখেছিল। ভয়ে জনগণ মুখ খুলতে পারেনি। ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটাকে আবার স্বাধীন করেছে। এ বিজয় ধরে রাখতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

এ এইচ শামীম/এসআর/জেআইএম