লাইফস্টাইল

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে যে ৫ উপায়ে

কোষ্ঠকাঠিন্য বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তার মধ্যে বার্ধক্যজনিত কারণ, মানসিক চাপ, উদ্বেগ, বিষণ্নতা, অনিদ্রা, কায়িক শ্রম না করা, যথেষ্ট আঁশযুক্ত খাবার না খাওয়া, পানীয় কম গ্রহণ করা, ভাজাপোড়া খাবার বেশি খাওয়া কিংবা চা ও কফি বেশি পান করা অন্যতম।

Advertisement

এক-দুই দিন পর পর মলত্যাগের বেগ হওয়া, শুষ্ক ও কঠিন মলত্যাগকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়ে থাকে। এটি বেশ বিরক্তিকর ও যন্ত্রণাদায়কও বটে। কোনো বিশেষ রোগবশত না হলে এটি খাবারের মাধ্যমেই সমাধান করা সম্ভব।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কী খাবেন?

মার্কিন চিকিৎসক টড সিনেট, ডিসি তার ‘দ্য গুড শট’ নামক বইয়ে উল্লেখ করেছেন, ‘আপনার শরীর কতটা সুস্থ তা নির্ভর করে হজক্ষমতার উপরে’। তিনি তার বইয়ে ৭টি উপায়ের কথা বলেছেন, যার মাধ্যমে পেট পরিষ্কার হবে নিয়মিত। জেনে নিন তবে-

পরিমিত খাবার খেতে হবে

পরিমিত খাবার খেতে হবে সঠিক সময় অনুযায়ী। তাহলে শরীর খাবার হজম করার সময় পায়। যদি আপনি সারাদিন একটু পর পরই খান তাহলে আপনার পরিপাকতন্ত্র যথেষ্ট সময় পাবে না হজম করার। এজন্য নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী খাবার খেতে হবে।

Advertisement

ফাইবারজাতীয় খাবার খান

ডা. সিনেট জানান, পেট পরিষ্কার রাখতে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ফাইবারজাতীয় খাবার খাওয়ার বিকল্প নেই। দিনে ২৫-২৮ গ্রাম ফাইবার গ্রহণ করতে হবে।

অন্যদিকে আপনি যদি কম ফাইবারজাতীয় খাবার খেয়ে পেট ভরান, তাহলে সেসব খাদ্য হজম হতে অনেক সময় লাগে। ফলে মলত্যাগ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। পেট পরিষ্কার রাখতে ফাইবার, প্রোটিন ও ভালো চর্বিজাতীয় খাবার খেতে হবে।

স্বাস্থ্যকর চর্বি গ্রহণ করুন

অনেক সময় ভালো ফ্যাটের উৎসগুলোও আমরা ক্ষতিকর ভেবে পরিহার করি। যেমন-ঘি, মাখন, গরু বা খাসির মাংস, ডিম, বাদাম, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি।

আরও পড়ুন

Advertisement

মুখে দুর্গন্ধ, লিভারের রোগের লক্ষণ নয় তো? দৈনিক ভিটামিন সি খেলে শরীরে যা ঘটে?

ডা. সিনেটের মতে, স্বাস্থ্যকর চর্বি পেট পরিষ্কার রাখতে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে থাকে। আর এমন ফ্যাটজাতীয় খাবার খেলে শরীরের অতিরিক্ত ও ক্ষতিকর চর্বিও দূর করা যায়।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন

পনির অপর নাম জীবন-কথাটির সঙ্গে সবাই নিশ্চয়ই একমত। শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করার বিকল্প নেই।

ডা. সিনেট ও গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট অবনীশ আগরওয়ালের মতে, দৈনিক পর্যাপ্ত পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে জলদি মুক্তি মেলে। এতে হজমব্যবস্থা উন্নত হয়। শরীরের ক্ষতিকর টক্সিন দূর হয়।

প্রোবায়োটিক খাবার খান

প্রোবায়োটিক খাবার খেলে অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে। ফলে খারাপ ব্যাকটেরিয়াগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। এ কারণে প্রোবায়োটিক গ্রহণ করলে পেট পরিষ্কার হয়।

প্রোবায়োটিক হলো বিশেষ এক প্রকার উদ্ভিজ ফাইবার, যা অন্ত্র বা কোলনের মধ্যের উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্টি প্রদান করে। এজন্য কলা, ওটস, পেঁয়াজ, রসুন,টকদই, আপেল, পনির, ডার্ক চকলেট, ডুমুর, সয়া দুধ ইত্যাদি খেতে পারেন।

ভিটামিন ডি’র অভাব পূরণ করুন

গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট অবনীশ আগরওয়ালের মতে, ভিটামিন ডি এর সঙ্গে পেট পরিষ্কার রাখার যোগসূত্র রয়েছে। ভিটামিন গ্রহণের ফলে অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় পেট হয় পরিষ্কার।

এজন্য সকালের রোদ পোহাতে হবে। পর্যাপ্ত রোদ পোহাতে না পারলে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন। পাশাপাশি শরীরচর্চা করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।

নিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে অর্শ্বরোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। কারণ অসম্পূর্ণ মলত্যাগ হওয়ায় অনেকেই পায়ুপথে প্রেশার দিয়ে থাকেন।

এ কারণে একসময় পায়ুপথে বিদ্যমান রক্তনালি ফুলে যায়। এর ফলে মলদ্বারে রক্তপাত দেখা যায়, যা হতে পারে ব্যথাযুক্ত। তাই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হেলাফেলায় না নিয়ে বরং এখন থেকেই সচেতন হোন।

সূত্র: ওয়েলঅ্যান্ডগুড

জেএমএস/এএসএম