ইতিহাস ঘাঁটলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়কদের সম্পর্কে জানা যায়। তাদের রাজনৈতিক জীবন বেশ চমকপ্রদ বটে। কেননা দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় থেকেও তাদের জনগণের চাপের মুখে সেই ক্ষমতাই ছেড়ে দিতে হয়েছে এক মুহূর্তে। এমন ইতিহাসের সাক্ষী আজ বাংলাদেশ।
Advertisement
তবে শুধু আমাদের দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয়, বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রনেতা এমন চাপের মুখে তাদের পদত্যাগ করতে হয়েছে। এজন্য বেশি দিন আগের ইতিহাস ঘাঁটতে হবে না। এ বছরই বিশ্বের যেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা, দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে স্বেচ্ছায় সরে গেছেন। চলুন এমন কয়েকজন সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ক্যাটালিন নোভাকপ্রেসিডেন্ট ক্যাটালিন নোভাক। তিনি ছিলেন হাঙ্গেরির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। ২০২২ সালের ১০ মার্চ তিনি নির্বাচিত হন প্রেসিডেন্টের পদে। তবে এ বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি জনরোষের মুখে পড়ে পদত্যাগ করেন তিনি। একাধিক শিশুকে যৌন নিগ্রহ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া ব্যক্তির সাজা মকুব করেছিলেন তিনি। সেই নিয়ে জনরোষের মুখে পড়তে হয়েছিল ক্যাটালিনকে। এর আগে বেশ কিছুদিন ধরেই হাঙ্গেরির বিরোধী দলের কর্মীরা ক্যাটালিনের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে প্রতিবাদ করছিল। তারপর প্রেসিডেন্ট নিজেই তার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আনেন।
আরও পড়ুনবাংলাদেশের যত ছাত্র আন্দোলনফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বর্নফ্রান্সের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বর্নি। ২০২২ সালের মে মাসে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। তার আগে ফ্রান্সের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এডিথ ক্রেসন। দায়িত্ব নেওয়ার দুই বছরের কম সময় আগে পদ ছাড়লেন তিনি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মেয়াদ পূরণের আগেই পদত্যাগ করেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বর্ন। মন্ত্রিসভায় রদবদলের আঁচ করে পদত্যাগ করেন তিনি।
Advertisement
আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকর২০২২ সালে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হন ভারতীয় বংশোদ্ভূত লিও ভারাদকর। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এ বছরের মার্চে পদত্যাগ করেন তিনি। ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক কারণ দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন। এমনকি তার দল ফাইন গেইলের নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা করেন ভারাদকর। তারপর আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনের সরকারি ভবন থেকে বিবৃতি প্রকাশ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আবেগাপ্লুত হয়ে লিও ভারাদকার বলেন, ‘ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক’ কারণেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আয়ারল্যান্ডের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নিজেকে আর ‘সেরা উপযুক্ত ব্যক্তি’ হিসেবে মনে করেন না তিনি।
ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ভো ভ্যান থুংচলতি বছরের মার্চ মাসে মেয়াদ পূরণের আগেই পদত্যাগ করেন ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ভো ভ্যান থুং। থুংয়ের বিরুদ্ধে দলীয় নীতি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ উঠেছিল, তার কর্মকাণ্ডের কারণে জনমতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। দলের পাশাপাশি দেশ ও তার নিজেরও সুনাম ক্ষুন্ন হয় বলে জানা গিয়েছিল। চাপের মুখে পদত্যাগ করেন থুং। ভো ভ্যান থুং এক বছর আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। একদলীয় শাসনব্যবস্থার দেশ ভিয়েতনামে প্রেসিডেন্টের পদটি আনুষ্ঠানিকমাত্র। এটি দেশটির শীর্ষ চারটি পদের একটি। দল ও শাসনসংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি দ্য সেন্ট্রাল পার্টি কমিটি।
হাইতির প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরিচাপের মুখে পড়ে হাইতির প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে ইস্তফা তিনি। সেই সময় ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দেশটিতে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে ক্রমেই উত্তাল হচ্ছিল দেশ। সেই আবহে পদত্যাগ করেন হেনরি। এর আগে ২০২১ সালে হাইতির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মইসি হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। তারপর থেকে হেনরি হাইতিকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।
আরও পড়ুনদু’পা নেই জন্ম থেকেই, বাধা হতে পারেনি সাফল্যের পথেইন্টারনেট ব্যবহারে কোনো টাকা লাগে না যে দেশেসূত্র: বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইম
Advertisement
কেএসকে/জেআইএম