‘এমন যদি হতো’, ‘বকুল ফুল’সহ বেশ কিছু শ্রোতাপ্রিয় গানের দল জলের গান। মন ছুঁয়ে থাকা ওই গানগুলোর নেপথ্যে বাজতো যে বাদ্য ও সুরযন্ত্রগুলো, পরম মমতা দিয়ে সেসব বানিয়েছিলেন শিল্পী রাহুল আনন্দ। গতকাল (৫ আগস্ট) সোমবার শিল্পীর বাড়িতে থাকা শতাধিক যন্ত্র তছনছ করেছে দুর্বৃত্তরা।
Advertisement
সদ্যসাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ধানমন্ডি বত্রিশ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ওই সড়কেই থাকতেন জলের গানের অন্যতম সদস্য শিল্পী রাহুল আনন্দ। ওই সময় তার বাড়িতেও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। জলের গানের সাবেক সদস্য সাইফুল ইসলাম জার্নাল জাগো নিউজকে জানান, একটি যন্ত্রও অবশিষ্ট নেই। তিনি বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে রাহুল দা নিজ হাতে ইনস্ট্রমেন্টগুলো তৈরি করেছিলেন।’
আরও পড়ুন সরকার পতনের পর যা বললেন শাকিব খান জেমস লিখলেন, জয় তরুণের জয়সোমবার বিকেলে হামলা ও অগ্নিসংযোগের সময় শিল্পী ও তার পরিবারের সদস্যদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। রাহুলের পারিবারিক এক বন্ধু জানিয়েছেন, রাহুলরা শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। তবে তার মন ভেঙে গেছে। জাগো নিউজের সংগ্রহ করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, রাহুলদের বাড়িটি রীতিমতো ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। সেখানে বাদ্যযন্ত্র, আসবাবপত্র ভেঙেচুরে একাকার হয়ে পড়ে রয়েছে।
জলের গান সংগীতপ্রেমী শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নিয়েছে। তাদের গানের কথা, সুর, গায়কি, সংগীতায়োজন ও উপস্থাপন একেবারেই ভিন্ন ঘরানার, যা লুফে নিয়েছিলেন মানুষ। রাহুলের হাতে তৈরি যন্ত্রগুলো দেখতে তার বাড়িতে গিয়েছেন সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেকেই। বাংলাদেশ সফরের সময় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ রাহুলের বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন। তার বাদ্যযন্ত্রগুলো দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনিও।
Advertisement
এদিকে রাহুলের বাড়িতে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেকে। জগন্ময় পাল ফেসবুকে লিখেছেন, রাহুল আনন্দ দা ও দিদির বাড়ি লুট ও পোড়ানো মানে আমার ও আমরা যারা বন্ধুসুজন তাদের বাড়িও লুট করেছেন, পুড়িয়েছেন। ওনাদের ওই বাসার সকল শৈল্পিক স্থাপনা, বাদ্যযন্ত্র, আসবাবপত্র লুট হওয়া, পুড়ে যাওয়া আমাদের পুড়িয়েছে, এখনো পোড়াচ্ছে। যে শঙ্কা দাগালেন আমাদের বুকে ... আপনাদেরও পোড়াবে, কোনো না কোনোভাবে পোড়াবেই।
এমআই/আরএমডি/জিকেএস