স্বাস্থ্য

৩৬ কেজির শিশুর স্তনের ওজন ১৫ কেজি!

১২ বছরের ছোট্ট শিশু বীথি আক্তার। টাঙ্গাইলের স্থানীয় একটি স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। ওজন পরিমাপক মেশিনে দাঁড়ালে বিথীর ওজন প্রদর্শিত হয় ৩৬ কেজি। এ দুটি লাইন পড়ে পাঠক হয়তো ভাবতে পারেন, এ আবার কোনো খবর? কিন্তু তারা ভিমড়ি খাবেন যখন শুনবেন বিথীর দুই স্তনের ওজনই প্রায় ১৫ কেজি! অস্বাভাবিক আকারের দুই স্তন ঝুলে পেটের নিচ পর্যন্ত নেমে গেছে। ওজনের ভারে ঠিকমতো হাঁটতেও পারছে না সে। শিশুটির দেহের মোট ওজনের প্রায় অর্ধেক তার স্তনের ওজন। শুধু তাই নয়, জন্ম থেকেই মুখমণ্ডলসহ পুরো শরীর পশমে ঢাকা। শিশু বিথী বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন। বিএসএমএমইউ ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান আজ রাতে জাগো নিউজকে জানান, মেয়েটি হরমোনজনিত সমস্যায় ভুগছে। সে গত দুই সপ্তাহযাবত হরমোন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ফরিদ উদ্দিনের অধীনে চিকিৎসাধীন। হরমোন বিভাগের চিকিৎসকরা ছাড়াও চর্ম ও যৌন, সার্জারিসহ একাধিক বিভাগের চিকিৎসকরা বিথীর চিকিৎসায় নজর রাখছেন।এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বিথীর বাবা আবদুর রাজ্জাক জানান, টাঙ্গাইল জেলার নাগরকোটে দেওভোগ থানায় তার গ্রামের বাড়ি। স্ত্রী বিউটি বেগম, মেয়ে বিথী ও দুই ছেলে তুষার (১০) ও বাঁধনকে (৭) নিয়ে তার সংসার। এলাকায় মোটরসাইকেল চালিয়ে দৈনিক তার আয় ১শ থেকে ৩শ টাকা।   এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে আবদুর রাজ্জাক জানান, জম্মগতভাবে বিথীর মুখমণ্ডলসহ সারা শরীর পুরুষদের মতো লোমশ। বিভিন্ন বয়সে স্থানীয় চিকিৎসক ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসককে দেখিয়েছেন। তারা হরমোনের সমস্যা বলে জানিয়েছেন। অর্থাভাবে ঢাকায় এনে চিকিৎসা করাতে পারেননি এতদিন। মেয়ের সারা শরীরে পশমে ভরা থাকলেও এ নিয়ে তার কোনো সমস্যা হতো না। প্রতিবেশি, স্কুলের শিক্ষক, স্কুলের সহপাঠি ও বড়-ছোটরা তাকে খুব সহজভাবে গ্রহণ করতো। এ কারণে শরীরের পশমের বিষয়টিকে স্বাভাবিক ঘটনা বলে ধরে নিয়ে জীবনযাপন করছিল বিথী।কিন্তু ১১ বছর বয়স থেকেই বিথীর স্তন অস্বাভাবিক আকারে বড় হতে থাকে। ১২ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই স্তন ঝুলে পেট পর্যন্ত নেমে আসে। হঠাৎ করে স্তনে প্রচণ্ড ব্যথা হতে শুরু করে। যন্ত্রণায় কয়েকদিন কান্নাকাটি করলে স্থানীয় এক চিকিৎসকের পরামর্শে আবদুর রাজ্জাক ধারকর্জ করে টাকা নিয়ে বিএসএমএমইউয়ে চলে আসেন।জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে আবদুর রাজ্জাক জানান, বিএসএমএমইউয়ের চিকিৎসকদের দেয়া ওষুধ খেয়ে তার মেয়ের দুই স্তনেরই ব্যাথা কমে গেছে। রাজ্জাক জানান, বিথীর খুব ইচ্ছে সে আগের মতো স্কুলে যাবে, খেলাধুলা করবে। কিন্তু কবে সেদিন আসবে সে অপেক্ষায় দিন গুনছেন তিনি। দরিদ্র এই দিনমজুর আর্থিক ব্যয় কোথা থেকে মেটাবেন সেটা নিয়েও চিন্তিত আছেন বলে জানান। এ ব্যাপারে বিশদভাবে জানতে হরমোন বিভাগের অধ্যাপক ডা. ফরিদউদ্দিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সাড়া মেলেনি। এমইউ/এনএফ/পিআর

Advertisement