কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে যারা নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে ১২ জনের বাড়ি পটুয়াখালীতে। এদের মধ্যে শিক্ষার্থী আছেন দুইজন, সাংবাদিক একজন, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তিনজন, ভ্যানচালক একজন, যুবদল নেতা একজন, শিশু শ্রমিক একজন, ট্রাকচালক একজন, গার্মেন্টস কর্মী একজন এবং সিএনজি চালক একজন।
Advertisement
অনুসন্ধানে জানা যায়, বাউফল উপজেলায় এ পর্যন্ত ৪ জনের মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এছাড়া পটুয়াখালী সদর উপজেলায় ২ জন, দুমকি উপজেলায় ১ জন, দশমিনা উপজেলায় ২ জন, গলাচিপা উপজেলায় ২ জন এবং রাঙ্গাবালী উপজেলায় ১ জনের মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে বাউফল উপজেলার বাসিন্দাই বেশি। এ পর্যন্ত মোট চারজনের মরদেহ এই উপজেলায় দাফন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুনিত কুমার গায়েন। এর মধ্যে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন ঢাকা টাইমসের সিনিয়র প্রতিবেদক মো. হাসান মেহেদী (৩১)। তিনি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নের উত্তর হোসনাবাদ গ্রামের মো. মোশারফ হোসেনের ছেলে।
যাত্রাবাড়ী এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নিহত হন ভ্যানচালক জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৫)। তিনি বাউফল উপজেলার মদনপুরা ইউনিয়নের দি পাশা গ্রামের মো. মইন উদ্দিন মৃধার ছেলে। ঢাকার পল্টনে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন বাউফল উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নবীন তালুকদার (৪২)। তিনি বাউফল উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের ইন্দ্রকুল গ্রামের মো. ফখরুলের ছেলে। ঢাকার দনিয়া এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন শিশু শ্রমিক মো. আমিনুল ইসলাম আমীন (১৬)। তিনি বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের ভরিপাশা গ্রামের মো. ওবায়দুল খাঁ’র ছেলে।
Advertisement
এদিকে পটুয়াখালী সদর উপজেলায় মোট দুইজন নিহত হয়েছেন বলে সদর থানার ওসি মো. জসিমসহ বেশ কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র হৃদয় চন্দ্র তরুয়া (২৩)। তিনি পটুয়াখালী পৌর এলাকার জুবিলী স্কুল সড়কের রতন চন্দ্র তরুয়ার ছেলে। এছাড়া ঢাকায় আন্দোলনের সময় ট্রাকচালক মো. দুলাল (৩৫) নিহত হয়েছেন। তিনি পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের হকতুল্লাহ গ্রামের মো. সুলতান সরদারের ছেলে।
কোটাবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে দশমিনা উপজেলার দুই বাসিন্দা নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় থানার ওসি নিশ্চিত করেছেন। ঢাকার পোস্তগোলা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন কবি নজরুল ইসলাম কলেজের ছাত্র মো. জিহাদ মোল্লা (২২)। তিনি দশমিনা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. নুরুল আমীন মোল্লার ছেলে। এছাড়া ঢাকার রায়েরবাগ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন ঢাকায় বোরকা হাউজ নামে একটি দোকানের মালিক জাকির হোসেন হাওলাদার (৩৫)। তিনি দশমিনা মাছুয়াখালী এলাকার মন্নান হাওলাদারের ছেলে।
এছাড়াও রাঙ্গাবালী উপজেলার বাসিন্দা পোল্ট্রি ব্যবসায়ী মো. শাহ-জামাল(২৬) গত ১৯ জুলাই ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তিনি রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবি ইউনিয়নের খাস মহল গ্রামের মো. হারুন ভূইয়ার ছেলে।
দুমকি উপজেলার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. মিলন (৩০) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। তিনি দুমকি উপজেলার ঝাটরা এলাকার মো. হোসেন হাওলাদারের ছেলে।
Advertisement
গলাচিপা থানার ওসি মো. ফেরদৌস আলম খান জানান, তাদের কাছে মোট দুই জন নিহত হওয়ার তথ্য আছে। এর মধ্যে পানপট্টি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. শাহ আলমের ছেলে গার্মেন্টস কর্মী মো. আতিকুল ইসলাম রুবেল (৩৪) ও সিএনজি চালক জাহাঙ্গীর খান (৪০)। জাহাঙ্গীর উপজেলার আমখোলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাউরিয়া এলাকার মৃত রত্তন আলী খানের ছেলে।
আব্দুস সালাম আরিফ/এফএ/জেআইএম