সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, গ্রেফতার ও হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় আন্দোলনে অংশ নেওয়ার পথে আফিদ্রি নামের এক শিক্ষার্থীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
Advertisement
শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার কার্তিকপুর এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কয়েকশ শিক্ষার্থীর একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হ্যালিপ্যাড মোড় প্রদক্ষিণ করে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয় সামনে ফিরে আসে। এসময় তাদের সঙ্গে অংশ নেয় শিক্ষকরাও। বিক্ষোভ কর্মসূচির একপর্যায়ে উপজেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা এসে তাদের জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আফ্রিদি নামের ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, আমি আন্দোলনে অংশ নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছিলাম। ভেদরগঞ্জ বাজারে আসলে গাড়ি থামিয়ে ছাত্রলীগের কিছু কর্মী আমার স্টুডেন্ট কার্ড ও মোবাইল চেক করতে থাকে। পরে তারা আমার ওপর কিল-ঘুষি আর লাঠি দিয়ে আঘাত করে।
Advertisement
তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন হিরু বলেন, আমরা আন্দোলনরত কোনো শিক্ষার্থীকে মারধর করিনি। তাদের বুঝিয়েছি। পরে তারা সবাই চলে যায়।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানায়, আমাদের এতোগুলো ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। এ মৃত্যুর দায়ভার সরকারের নিতে হবে। আমরা এ হত্যার বিচার চাই। বিচার না হলে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
আন্দোলন সমন্বয়ক রহমাতুল্লাহ নেহাল বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যে আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল, সেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, গ্রেফতার ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। অন্যায়ভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে আমাদের ভাইদের। তারই অংশ হিসেবে আজ আমরা রাস্তায় নেমেছি। আমরা এ হত্যার বিচার দাবি করছি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর এবং আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইমামুর রহমান বলেন, সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী যে আন্দোলন চলছে তার অংশ হিসেবে আমাদের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করতে এসেছিলেন। তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক ও প্রশাসনিক লোকজন সঙ্গে ছিলাম। যাতে কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয়। তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন শেষ করে চলে গেছে।
Advertisement
শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভেদরগঞ্জ সার্কেল) মুশফিকুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছে। তাই আমাদের কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।
বিধান মজুমদার অনি/আরএইচ/এএসএম