মোবাইল নেটওয়ার্কে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও মেসেঞ্জার আবারও সচল হয়েছে। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর শুক্রবার (২ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে ধীরে ধীরে সচল হতে শুরু করে।
Advertisement
তবে দুপুর থেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে যে ধীরগতি দেখা দেয়, তা এখনো রয়েছে বলে জানিয়েছেন গ্রাহকরা। যদিও মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো এবং ব্রডব্যান্ড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, তাদের দিক থেকে কোনো ‘প্রতিবন্ধকতা’ সৃষ্টি করা হয়নি।
অন্যদিকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কর্মকর্তারা এ নিয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন। তারা বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কোনো কথা বলতেও রাজি নন।
মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহকরা জানান, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিক থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে মোবাইলের ফোরজি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ফেসবুকে লগইন করা যাচ্ছিল না। একই সময়ে রাশিয়াভিত্তিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপ টেলিগ্রামও ব্যবহার করতে পারছিলেন না মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহকরা।
Advertisement
আরও পড়ুন
মোবাইল ইন্টারনেটে অনেক এলাকায় চালানো যাচ্ছে না ফেসবুক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিসের ফেসবুক আইডি উধাও বিকেলে খুলছে ফেসবুক-টিকটকসহ সব সোশ্যাল মিডিয়াসন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর থেকে ধীরে ধীরে বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক ব্যবহার স্বাভাবিক হয়। তবে ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল ইন্টারনেটে এখনো ধীরগতি পাচ্ছেন গ্রাহকরা। এতে প্রয়োজনীয় কাজ করতে বিপাকে পড়ছেন আইটিখাত সংশ্লিষ্টরা।
অনলাইনভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও বোরহান মাহমুদ জানান, টানা দুই সপ্তাহ ইন্টারনেটে বিঘ্ন ঘটায় তারা বিপাকে রয়েছেন। ইন্টারনেট সেবা সচল হলেও এখনো ধীরগতি পাওয়া যাচ্ছে। তার মধ্যেই আজ আবার মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক-ম্যাসেঞ্জার ও টেলিগ্রাম বন্ধ রাখা হলো। সন্ধ্যার পর থেকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটেও প্রচুর ধীরগতি পাচ্ছি। এ দিয়ে কোনো কাজই করা যাচ্ছে না।
জানতে চাইলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এমদাদুল হক বলেন, ‘আমাদের দিক থেকে সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। হয়তো অনেক গ্রাহক স্বাভাবিক গতি পাচ্ছেন না। আমরা গ্রাহকদের সর্বোচ্চ গতির ইন্টারনেট সেবা দিতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
Advertisement
তবে মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তারা বিষয়টি গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি। একটি অপারেটরের একজন কর্মকর্তাকে মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ না করে হোয়াটসঅ্যাপে জাগো নিউজের এ প্রতিবেদককে বার্তা পাঠান। তাতে লেখা, ‘ইন্টারনেট ইস্যুতে কোনো কথা বলার অনুমতি বা সুযোগ নেই। দুঃখিত।’
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিটিআরসির স্পেকট্রাম (তরঙ্গ) বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তাকে কল দেওয়া হলেও তারা রিসিভ করেননি। তবে অন্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জাগো নিউজকে জানান, সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক বন্ধ রাখা হয়েছিল। দ্রুতই তা স্বাভাবিক হয়ে গেছে। এটা সাময়িক ‘বিভ্রাট’।
আরও পড়ুন
সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজবের ছড়াছড়ি, করণীয় কী? করজোড়ে ক্ষমা চাইলেন পলককোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত ১৮ জুলাই রাত আনুমানিক ৯টার দিকে সারাদেশে ইন্টারনেট শাটডাউন হয়ে যায়। এরপর গত ২৩ জুলাই রাতে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা সচল হয়। ধীরে ধীরে সব জায়গায় ব্রডব্যান্ড সেবা চালুর পর গত ২৮ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট সচল হয়।
তবে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো তখনো বন্ধ রেখেছিল সরকার। ৩১ জুলাই প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুলে দেওয়া হয়। তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশের সংবিধান, নিজেদের কমিউনিটি গাইডলাইন এবং সহিংসতামূলক কনটেন্ট প্রচার না করার প্রতিশ্রুতিও পেয়েছে সরকার।
এএএইচ/এমকেআর