জীবিকার তাগিদে কিশোর বয়স থেকে ঘাড়ে গামছা-রশি বেঁধে ট্রেনে মুড়িমাখা বিক্রি করতেন আবু বকর। বয়স বেড়ে গেলে বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশনের পাশে ভ্যানে একই ব্যবসা শুরু করেন তিনি। প্রায় ৩০ বছর মুড়িমাখা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করলেও এবার কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তার।
Advertisement
আবু বকর বলেন, প্ল্যাটফর্মের পাশে মুড়িমাখা ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতাম। কয়েক দিনে স্টেশনে আর ট্রেন আসে না। সারাদিনে দুই থেকে তিনশ’ টাকা বিক্রি হয়। এতে যে লাভ হয় সেটা দিয়ে কষ্ট করে সংসার চালাতে হচ্ছে।
বকর বলেন, ছোটবেলা থেকে সংসারের দায়িত্ব কাঁধে নিলেও জীবনের দুইবার অন্ধকার দেখলাম। এক করোনাকালীন আর এবার কোটা সংস্কার আন্দোলনে। কয়দিন আগে প্রতিদিন বিরামপুর স্টেশনে অনেক ট্রেন আসে। যাত্রীরা নেমে মুখরোচক খাবার হওয়ায় শখ করে মুড়িমাখা খেতেন। দিনে এক হাজার থেকে ১২০০ টাকা বিক্রি হত। দোকান খরচ বাদ দিয়েও যে আয় হত সেটা দিয়ে সংসার চালাতে কোনো কষ্ট হত না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌর শহরের আমবাগান এলাকায় আবু বকরের বাড়ি। তিন ছেলে এক মেয়ে রয়েছে তার। দুই ছেলে ও মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। স্বামী, স্ত্রী ও এক ছেলেকে নিয়েই তার বর্তমান সংসার।
Advertisement
বকরের দোকানে মুড়িমাখা নিতে আসা রেজাউল করিম বলেন, আমার বাড়ি স্টেশনের পূর্বদিকে। ছোটবেলা থেকে বকর ভাইয়ের দোকানে মুড়িমাখা খাই। হরেক মসলা আর বিভিন্ন প্রকার কালাই দিয়ে মজাদার মুড়িমাখা তৈরি করেন তিনি। তার দোকানে সব সময় ভিড় থাকতো। কিন্তু কয়েকদিন ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকা অনেকটা বিপাকে পড়েছেন।
বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশন কার্যালয় সূত্র জানায়, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, ঘোড়াঘাট ও হাকিমপুরের মধ্যে বিরামপুর স্টেশনটি সচল রয়েছে। স্টেশনটি সবসময় মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকলেও কোটা সংস্কারের আন্দোলনের কারণে সব ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র মালবাহী ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
মো. মাহাবুর রহমান/আরএইচ/এএসএম
Advertisement