কর্মস্থলে সময় ব্যবস্থাপনা বা টাইম ম্যানেজমেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতিদিনের প্রতিটি কাজের জন্য সময়কে সঠিকভাবে ভাগ করে নেওয়া উচিত। আবার সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শেষ করাও জরুরি। সময়ের কাজ সময়ে করা এবং সময়কে কাজে লাগানোই আসলে সময় ব্যবস্থাপনা বা টাইম ম্যানেজমেন্ট।
Advertisement
মূলত সময় ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে প্রাত্যহিক জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস ও গুণ সম্পর্কে জানতে হবে। এমনকি সেগুলোর প্রয়োগ ঘটাতে হবে। তাহলে আসুন, সময় ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বাড়ানোর কৌশল জেনে নিই।
লক্ষ্য নির্ধারণপুরো কর্মজীবন হোক বা আজকের নির্দিষ্ট কাজের হোক, লক্ষ্য নির্ধারণ করুন হিসাব করে। কারণ সঠিক ও যৌক্তিক লক্ষ্য সহজে অর্জন করা যায়। তাই লক্ষ্য নির্ধারণ করতে কৌশলী হতে হবে। এজন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে। যেমন- ক. লক্ষ্যটি হবে সুনির্দিষ্ট।খ. লক্ষ্যটি হবে সহজে পরিমাপযোগ্য।গ. লক্ষ্যটি হবে দক্ষতা দ্বারা অর্জনযোগ্য।ঘ. প্রতিটি লক্ষ্যই হবে কর্মজীবনের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক।ঙ. সময়ের কাজ সময়ে করতে হবে।
কাজের তালিকাপ্রতিদিনের কাজের তালিকা তৈরির সময় কোন কাজটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেটি আগে রাখুন। প্রয়োজনে কাজগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভাগ করুন। এখানেও কিছু পরিকল্পনা করে নিতে পারেন। যেমন-ক. খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি, যা এখনই করতে হবে।খ. গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু খুব জরুরি নয়, এটি তার পরে করুন।গ. জরুরি কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়, এমন কাজ তৎক্ষণাৎ করুন আর না করতে চাইলে সিদ্ধান্ত নিন।ঘ. অপ্রয়োজনীয় কাজগুলো করবেন না। জীবনে সবকিছু করা যায় না এবং করতেও হয় না।
Advertisement
প্রতিদিনের কাজের তালিকা প্রয়োজনে আগের রাতেই তৈরি করতে হবে। স্মার্টফোনের নোট প্যাড বা কাগজে লিখে রাখুন। দিন শুরু করুন তালিকা দেখে, দিন শেষ করুন তালিকা দেখে। কোন কাজটি বাকি থাকলো এবং কেন থাকলো, সেটি নিয়ে চিন্তা করুন। তাহলেই সময় ব্যবস্থাপনা দক্ষতা দিন দিন বাড়বে।
আরও পড়ুন চাকরির ভাইভায় যেসব ভুল করা যাবে না ব্যাংকের লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি ও পরামর্শ নির্দিষ্ট সময়ে শুরুকাজ নির্দিষ্ট সময়ে শুরু ও শেষ করতে টাইম ট্র্যাকিং করুন। কোন কাজটি করতে কতটুকু সময় লাগছে দেখুন। বেশি লাগলে, কেন বেশি লাগছে বোঝার চেষ্টা করুন। আরও কম সময়ে করার চেষ্টা করুন। এ কাজের জন্য কিছু ডিজিটাল টুল পাওয়া যায়, ব্যবহার করে সুফল নিতে পারেন।
কাজ জমিয়ে না রাখাকাজ জমিয়ে রাখার কথা ভুলে যেতে হবে। পরে করবো ভাবনাটি একটি রোগ! ভাবনাটি কর্মজীবনের সবচেয়ে বড় শত্রু। তাই কাজ জমিয়ে রাখা যাবে না। কাজ জমিয়ে রেখে বিশ্রাম নেওয়ার থেকে কাজ শেষ করে বিশ্রাম নেওয়া ভালো।
একটানা কাজ নয়একটানা কাজ করবেন না। এটি ক্লান্তিকর এবং কর্মজীবনের জন্য ক্ষতিকর। কাজের মাঝে ছোট ছোট বিরতি নিন। এক ঘণ্টা কাজে ৫-১০ মিনিট বিরতি নিন। লম্বা সময় কাজ করলে ২০-৩০ মিনিটের বিরতি নিন। হাঁটুন, চা বা কফি পান করুন, পানি পান করুন। এতে কাজের গতি আরও বাড়বে। শরীরও ভালো থাকবে।
Advertisement
বেশি প্রয়োজন না হলে হাতের কাছে স্মার্টফোন রাখবেন না। রাখলেও সাইলেন্ট মোডে রাখুন। সোশ্যাল মিডিয়া লগইন করবেন না। তাহলে নিজের অজান্তেই অপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। কর্মক্ষেত্রে সময় ব্যবস্থাপানার বড় শত্রু সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি অদম্য আকর্ষণ!
মনে রাখবেন, কাজে মনোযোগ ধরে রাখতে অপ্রাসঙ্গিক গভীর চিন্তা থেকে বিরত থাকবেন। অফিসে কাজের পরিবেশ নিজে বজায় রাখুন। অন্যকে বজায় রাখতে সাহায্য করুন। না হলে মালিক বা ম্যানেজমেন্টকে কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে বলুন। কেননা প্রতিটি সফল কাজের আনন্দেই জীবন সুন্দর হয়ে ওঠে।
এসইউ/জিকেএস