জাতীয়

কেন এই রক্ত ঝরা, মানুষের জীবন নেওয়া

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ আর সেই সাথে সাথে মানুষের জীবন নেওয়া এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা থেকে শুরু করে ছোট শিশুটি, কেন এই রক্ত ঝরা। আজকে যাদের আমরা হারিয়েছি, আমি তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। আর যারা আপনজন হারিয়েছে, তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাই।

Advertisement

বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আবদুর রহমান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি নিজে দেখেছি এখনো বহুত আহত। গতকালকে একটি শিশুকে দেখলাম। এটা অত্যন্ত কষ্টকর। আমি জানি না অপরাধটা কি ছিল আমাদের।

তিনি বলেন, যে ইস্যুটা নেই, সেটা নিয়েই আন্দোলনের নামে এই ধরনের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপগুলো, দেশের অর্জনকে নষ্ট করা। আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। কে কি অর্জন করলো সেটাই আমার প্রশ্ন। আমার কাছে ক্ষমতা তো ভোগের বস্তু না। আমি তো আরাম-আয়েশ করার জন্য ক্ষমতায় আসিনি। আমি দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি দেশটাকে একটু উন্নত করতে এবং সেটা আমি সফলভাবে করতে পেরেছি।

Advertisement

শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। গুলি, বোমা, বোমা পুতে রাখা, সরাসরি গুলি, গ্রেনেড হামলা করে মারার চেষ্টা, বহুবার আমাকে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে আসার পর। আমি তো জীবনে পরোয়া করিনি। দেশের জন্য কাজ করতে হবে, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে হবে। দারিদ্র্যের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। একটি মানুষও গৃহহীন-ভূমিহীন থাকবে না, তাদের বিনা পয়সায় ঘর দিতে হবে, চিকিৎসা ব্যবস্থা তাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে তাদের বিনাপয়সায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়া, শিক্ষায় প্রত্যেকটা পরিবারকে সহায়তা, বৃত্তি-উপবৃত্তি দিয়ে সহযোগিতা করা। উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা। অবকাঠামোগত উন্নয়নে আজকে বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষ চলাচলের সুবিধা পেয়েছে, আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন করতে পারছে, তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার সুবিধা পাচ্ছে। সেই সময় এ ধরনের একটা ঘটনা ঘটিয়ে একদিকে বাংলাদেশের উন্নয়নকে পেছনে ফেলা, আর একদিকে কতগুলো মায়ের কোল খালি করা। যারা স্বজন হারিয়েছে তাদের প্রতি আমার সহমর্মিতা জানাই।

আরও পড়ুন

প্রাণহানি-সহিংসতার তদন্তে আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতা চেয়েছি আমার নয়, আটক নিরপরাধ শিক্ষার্থীর খোঁজ নিন: ঢাবি শিক্ষক ময়মনসিংহে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, পাল্টা অবস্থানে ছাত্রলীগ

তিনি বলেন, এ বিষয়ে এরই মধ্যে আমরা জুডিসিয়াল কমিটি গঠন করে দিয়েছি। কারো দাবির অপেক্ষায় আমি থাকিনি। আগেই জুডিসিয়াল কমিটি করে দিয়ে, আজকে আবার আমরা নির্দেশ দিয়েছি আমরা একজন জর্জ সাহেবকে দিয়ে করেছি সেটা আমি বলেছি আরও দুইজন জর্জ সাহেবকে দিয়ে, আরও দুইজন লোকবল বৃদ্ধি করে দিয়ে এবং তাদের তদন্তের পরিধি বাড়ানো। সেই আমরা জাতিসংঘের কাছে আবেদন করেছি, আমরা আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন সংস্থা আছে বিশেষ করে বিদেশি, তাদের কাছেও আমরা সহযোগিতা চাই যে ঘটনা যথাযথ সুষ্ঠু তদন্ত এবং যারা এর সঙ্গে দোষী তাদের সাজার ব্যবস্থা।

তিনি বলেন, আমি জানি এখানে আমার কোনো ঘাটতি ছিল না। যারা বসে ছিল আমি বারবার আলোচনা, তাদের দাবি মানা, আর তাদের দাবি মানবো কি যেটা আমি করে দিয়েছি সেটাই তো, এটা তো আমারই করা, ইস্যুটা তো আমারই, আপিল করা হয়েছে আপিলেট ডিভিশনে, তারপর এই যে একটা ঘটনা ঘটিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে দেশকে পেছনে টেনে নেওয়ার এই চক্রান্তে যারা জড়িত সেটা আপনাদের খুঁজে বের করা উচিত।

Advertisement

সরকারপ্রধান বলেন, একাত্তরে যারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল, তাদের চক্রান্ত বারবার আমাদের দেশকে পিছিয়ে নিয়ে গেছে। এটা হচ্ছে সবচেয়ে কষ্টের, সবচেয়ে দুঃখের। যাইহোক, আমি যেহেতু স্বজন হারিয়েছি আমি জানি কষ্ট। তাই আমি যারা আপনজন হারিয়েছেন, তাদের প্রতি আমার সহমর্মিতা জানাচ্ছি।

এসইউজে/এমআরএম/এএসএম