ভারতের কেরালা রাজ্যে ভয়াবহ ভূমিধসে এখন পর্যন্ত দেড় শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) রাজ্যের ওয়েনাড় জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিন দফা ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১৮৬ জন আহত হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
Advertisement
এখনো শতাধিক মানুষ সেখানে আটকা পড়ে আছেন। সরকারি বিভিন্ন সংস্থা দুর্যোগকবলিত স্থানে উদ্ধারকাজ করে যাচ্ছেন। অনেক পরিবারই জানিয়েছে যে, তারা তাদের প্রিয় স্বজনদের খোঁজ পাচ্ছেন না।
এদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা দুর্যোগকবলিত এলাকা থেকে এক হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। ভারতের দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ), সেনাবাহিনী, রাজ্য পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবী এবং বনকর্মকর্তারা উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ব্রিগেডিয়ার অর্জুন সিগান।
তিনি জানান, এনডিআরএফ এবং সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার জন্য বিমানবাহিনীর বেশ কয়েকটি টিম এবং হেলিকপ্টারও কাজ করছে।
Advertisement
ভারী বৃষ্টি এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু ধসে পড়ার কারণেও সেখানে উদ্ধারকাজ ব্যহত হচ্ছে। ভয়াবহ এই দুর্যোগের পর পরই কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি এলডিএফ সরকারকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
দুর্যোগে নিহতদের পরিবারকে ২ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এছাড়া আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
ঠিক কতসংখ্যক মানুষ ঘর-বাড়ি বা অন্য জায়গায় আটকে রয়েছেন, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। এছাড়া নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
যেখানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে তার কাছেই চালিয়ার নামে একটি নদী রয়েছে। মালাপ্পুরমের নীলাম্বুরের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে নদীটি। স্থানীয়দের আশঙ্কা, অনেকেই খরস্রোতা এই নদীতে ভেসে গেছেন।
Advertisement
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে চার ঘণ্টার মধ্যে ওয়েনাড়ের পাহাড়ি গ্রাম মেপ্পাদির কাছে তিন দফা ভূমিধস আঘাত হানে। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, ভূমিধসের পরপরই সব সরকারি সংস্থা উদ্ধারকাজে নেমেছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও আটকে থাকা লোকজনকে দ্রুত বের করে আনার জোর প্রচেষ্টা শুরু হয়। ওয়েনাড়ে তিন দফা ভূমিধস আঘাত হানার আগে ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৩৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এদিকে ওয়েনাড় এবং অন্যান্য জেলায় আগামী কয়েকদিনে আরও বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া দফতর। ওয়েনাড়ে ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেখানে বহু বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়ে গেছে, পানির স্রোতে মরদেহ ভেসে গেছে এবং গাছ উপড়ে গেছে।
টিটিএন