আন্তর্জাতিক

ইরানে গুপ্তহত্যার শিকার কে এই ইসমাইল হানিয়া?

ইরানে গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছেন ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া। নতুন ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে তেহরানে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে গুপ্তহামলায় প্রাণ হারিয়েছেন হামাসপ্রধান।

Advertisement

বুধবার এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, ইরানের রাজধানী তেহরানে হানিয়ার বাসস্থানে ‘ইহুদিবাদী গুপ্ত হামলার’ ঘটনা ঘটেছে। এতে ৬২ বছর বয়সী হামাসপ্রধান ও তার একজন দেহরক্ষী নিহত হয়েছেন।

কে এই ইসমাইল হানিয়া

ইসমাইল আবদেল সালাম হানিয়া, যার ডাক নাম আবু আল-আবদ। তার জন্ম ১৯৬২ সালে গাজার শাতি শরণার্থী শিবিরে। হামাস আন্দোলনের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ সরকারের দশম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইসমাইল হানিয়া।

গাজার আল-আজহার ইনস্টিটিউটে এবং পরে গাজার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন হানিয়া। সেখান থেকে আরবি সাহিত্যে স্নাতক পাস করেন তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন>>

ইরানে হামাসপ্রধান ইসমাইল হানিয়া নিহত হানিয়া নিহত, কী বলছে হামাস? ইরান-ইসরায়েল পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ কি অনিবার্য?

১৯৮৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকাকালীন তিনি ইসলামিক ছাত্র ব্লকে যোগদান করেন। সংগঠনটিকে হামাসের অগ্রদূত হিসেবে মনে করা হয়।

১৯৮৯ সালে আটকের পর ইসরায়েল হানিয়াকে তিন বছর বন্দি রাখে। এরপর তাকে মারজ আল-জুহুর নামের ইসরায়েল এবং লেবাননের মধ্যকার একটি নো-ম্যানস-ল্যান্ডে নির্বাসিত করা হয়। সেখানে বেশ কয়েকজন হামাস নেতার সঙ্গে অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে অন্তত এক বছর কাটিয়েছিলেন তিনি।

নির্বাসন শেষে হানিয়া গাজায় ফিরে আসেন এবং ১৯৯৭ সালে হামাস আন্দোলনের আধ্যাত্মিক নেতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের অফিসের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। এটি তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে।

Advertisement

২০০৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি হামাস তাকে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করে এবং একই মাসের ২০ তারিখ তাকে নিযুক্ত করা হয়।

এক বছর পর ফিলিস্তিনের জাতীয় কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস হানিয়াকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করেন। কারণ, ইজ আল-দিন আল-কাসাম ব্রিগেডস গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে আব্বাসের ফাতাহ আন্দোলনের প্রতিনিধিদের বহিষ্কার করে। সেই সহিংসতায় অনেকে মারা যান।

আরও পড়ুন>>

‘লড়াই আপাতত শেষ, ইসরায়েল প্রতিশোধের চেষ্টা করলে আরও বড় আক্রমণ’ কুয়েত-কাতারের মার্কিন ঘাঁটি থেকে ইরানের ওপর হামলা নিষিদ্ধ ইসরায়েলে হামলা: উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ইরানে মিছিল

হানিয়া এরপর বেশ কয়েকবার ফাতাহ আন্দোলনের সঙ্গে সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

২০১৭ সালের ৬ মে থেকে তিনি হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

হারিয়েছেন পরিবারের অনেক সদস্য

গত এপ্রিলে ঈদের দিন গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় ইসমাইল হানিয়ার পরিবারের অন্তত ছয় সদস্য নিহত হন।

গাজা শহরের পশ্চিমে একটি শরণার্থী শিবিরে ওই হামলা চালানো হয়। এতে প্রাণ হারান হামাস নেতার তিন ছেলে হাজেম, আমির ও মুহাম্মদ এবং তিন নাতি-নাতনি।

ইসরায়েলের হামলায় হানিয়া পরিবারের আরও সদস্য এর আগে নিহত হয়েছেন। তার আরেক ছেলে গত ফেব্রুয়ারিতে এবং ভাই ও ভাতিজা অক্টোবরে প্রাণ হারান। এছাড়া গত নভেম্বরে নিহত হন তার এক নাতি।

সূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি বাংলাকেএএ/