দেশজুড়ে

খরার কবলে আগাম জাতের আমন চাষ

আষাঢ়ে বৃষ্টি হলেও মাঝ শ্রাবণে বৃষ্টির দেখা নেই। এতে করে দিনাজপুরের আমন চাষিরা খরার মুখে পড়েছেন। যারা আলু চাষের জন্য আগাম ধানের চারা রোপণ করেছেন তারা সেচ দিচ্ছেন। আবার যারা এখনো চারা রোপণ করেননি তারাও সেচ দিয়ে আমনের চারা রোপণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

Advertisement

মঙ্গলবার দিনাজপুরের সদর ও বিরল উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, আমনের ক্ষেতে কৃষকরা শ্যালো মেশিন লাগিয়ে সেচ দিচ্ছেন। অনেকে আষাঢ় মাসের বৃষ্টিতেই সুগন্ধি ধান ব্রি-৯০ (৯০ জিরা) ও ব্রি- ৫১ (হাইব্রিড) জাতের ধান রোপণ করেছেন। কিন্তু শ্রাবণে বৃষ্টি না হওয়ায় ও তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। রোপিত চারা পুড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে যারা এখনো চারা রোপণ করেননি, তারা সেচ দিয়ে আমন চারা রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন।

বিরল উপজেলার ২ নম্বর ফরক্কাবাদ ইউনিয়নের লালমাটিয়া গ্রামের কৃষক আমজাদ আলী বলেন, শ্রাবণ মাসে বৃষ্টি নেই, রোদে জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে ২৩ হাজার টাকা দিয়ে নতুন মেশিন কিনে জমিতে সেচ দিচ্ছি। তা না হলে চারা নষ্ট হয়ে যাবে।

আরেক কৃষক আজগার আলী জানান, তিনিও আষাঢ়ের বৃষ্টিতে ৪ বিঘা জমিতে ব্রি- ৫১ (হাইব্রিড) জাতের ধান রোপণ করেছেন। হাইব্রিড ধান চাষে পানি বেশি প্রয়োজন। এদিকে বৃষ্টির দেখা নেই। রোদে জমি ফেটে গেছে। তাই তিনি জমিতে সেচ দিচ্ছেন। এতে খরচ বেড়ে যাবে।

Advertisement

সদর উপজেলার উমরপাইল বালুপাড়া গ্রামের কৃষক আবুজার ও আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শ্রাবণের ১৫ দিন। কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই । আষাঢ়ে যে বৃষ্টি হয়েছিল তা প্রচণ্ড রোদে ও গরমে শুকিয়ে গেছে। খরার কবলে পড়েছে দিনাজপুর। এখনই আমন চারা রোপণ করতে না পারলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে না।

চলতি আমন মৌসুমে ২ লাখ ৭০ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলা কৃষি বিভাগ। এ জেলায় আগাম জাতের ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান মিয়া বলেন, জেলায় চলতি আমন মৌসুমে ২ লাখ ৭০ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এরমধ্যে রয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাতের ২ লাখ ৩৬ হাজার ২৫০ হেক্টর, হাইব্রিড জাতের ২৫ হাজার ১৫০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের জন্য রয়েছে ৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমি। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টন চাল।

শ্রাবণে বৃষ্টি না হওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, এখনো যথেষ্ট সময় রয়েছে। এখন যেসব জমিতে আমন চারা রোপণ চলছে সব আগাম জাতের। তারা এই ধান তুলে আলু চাষ করবেন।

Advertisement

এদিকে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুরে মৌসুমি বায়ু বিরাজ করছে। যে কোনো সময় নামতে পারে বৃষ্টি। তবে তাপমাত্রা ৩৬-৩৮ ডিগ্রি পর্যন্ত ওঠানামা করছে। গত সোমবার বিকেল ৩টায় সারাদেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দিনাজপুরে রেকর্ড করা হয় ৩৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এমদাদুল হক মিলন/জেডএইচ/