সহিংসতামূলক কনটেন্ট ছড়ানোয় বাংলাদেশে মেটার তিনটি প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং টিকটক বন্ধ রয়েছে। তিনটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে সরকারের পক্ষ থেকে তলব করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। পাশাপাশি ইউটিউব চালু থাকলেও তাদেরও তলব করা হয়েছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) পর্যন্ত তাদের জবাব দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বুধবার (৩১ জুলাই) ফেসবুক, টিকটক ও ইউটিউবের প্রতিনিধিদের সশরীরে বিটিআরসিতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
তবে মঙ্গলবার দুপুর ২টা পর্যন্ত শুধু টিকটকের পক্ষ থেকে ই-মেইলে সাড়া মিলেছে। ইউটিউব ও মেটা (ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ) বিটিআরসিকে এখনো পর্যন্ত কোনো জবাব দেয়নি। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক নিজে এ তথ্য জানিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীকাল (বুধবার) পর্যন্ত আমরা ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটককে একটা টাইম (সময়) দিয়েছিলাম। আমরা আশা করেছিলাম যে তারা লিখিত ব্যাখ্যাটা দেবে। কিন্তু আমরা এখনো তাদের লিখিত বা মৌখিক ব্যাখ্যা পাইনি।’
Advertisement
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘টিকটক ই-মেইলে একটা রিপ্লাই (প্রতি উত্তর) দিয়েছে যে, তারা এ নিয়ে খুব আন্তরিক। সরকারকে সহযোগিতা করতে চান। তারা ব্যাখ্যাগুলোও দিতে চান। বাকি দুটি অর্থাৎ, মেটা ও ইউটিউবের সাড়া পাইনি।’
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে ‘চলমান সময়ে সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক জরুরি সভা’ শেষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন
বাড়ছে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার ফেসবুক-টিকটকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দক্ষ ফ্রিল্যান্সার ছিলেন মুগ্ধ, ফেসবুকে আলোচনায় তার সাফল্যফেসবুক ও ইউটিউবের সাড়া পাওয়ার ব্যাপারে পলক এখনো আশাবাদী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বুধবার সকাল ৯টা, ১০টা ও বেলা ১১টায় আমরা পর্যায়ক্রমে তিনটি মাধ্যমের সঙ্গে বসতে চেয়েছিলাম। ৯টায় টিকটক, ১০টায় ইউটিউব ও ১১টায় ফেসবুক বা মেটা। আজ পর্যন্ত তারা কিছু বলেননি। তবে এখনো সময় আছে। বেঁধে দেওয়া সময় পর্যন্ত দেখি। তারা কী ব্যাখ্যাটা দেন?’
Advertisement
কবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো খুলবে জানতে চাইলে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘যদি তাদের ব্যাখ্যা সন্তোষজনক হয়, তাহলে তো আমরা শিগগির খুলে দেবো। বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম একটি উদার গণতান্ত্রিক দেশ। যেখানে কোনো বাধা নেই। আমরা শুধু তাদের জিজ্ঞাসা করেছি যে, বাংলাদেশের আইন, সংবিধান এবং তাদের নিজস্ব যে পলিসি ও কমিউনিটি গাইডলাইন আছে, সেটা তারা কীভাবে মেইনটেইন করছে বা আদৌও করছে কি না। সেটা আমরা জানতে চাই।’
ইন্টারনেট বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের বহু দেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে দাবি করে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন, আপনি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা বা সোশ্যাল মিডিয়া বা বিভিন্ন অ্যাপলিকেশন ব্লক করে রাখার পরিসংখ্যানটা দেখেন। দেখবেন, সেখানে শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যেও বাংলাদেশ নেই।’
এর আগে দুপুর ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সাইবার নিরাপত্তা সভায় উপস্থিত ছিলেন টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ড. মো. মুশফিকুর রহমান, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক, জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ ব্যাংক, সিভিল অ্যাভিয়েশন, পুলিশ, ডিজিএফআই ও এনএসআই-এর প্রতিনিধিরা।
এএএইচ/ইএ/এএসএম