দেশের বাজারে ডলার সংকট দূর হয়নি। সংকট কাটাতে নেওয়া কোনো উদ্যােগই কাজে আসেনি। তবুও বেশ কিছু দিন অনেকটা স্থিতিশীল অবস্থায় ছিল ডলারের দর। ব্যাংক ও খোলাবাজারের মধ্যে দরের পার্থক্য কমে আসায় এমনটা হয়।
Advertisement
তবে সেই স্থিতিশীল থাকা ডলারের দর আবারও বাড়তে শুরু করেছে। এখন খোলাবাজারে ডলারের দর বেড়ে ১২২ টাকা থেকে ১২৩ টাকা চাওয়া হচ্ছে। এর মধ্যবর্তী দরেও মিলছে ডলার। মূলত চাহিদা বাড়ার কারণে দর বেড়েছে।
এদিকে কোটা সংস্কার নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে তৈরি হওয়া সাম্প্রতিক পরিস্থিতির আগেও নগদ ডলার বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায়। ব্যাংকগুলোও রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে ১১৮ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত দরে ডলার কিনছে। এর আগে রেমিট্যান্স কেনায় দর ছিল ১১৭ টাকা।
মতিঝিল এলাকার একটি এক্সচেঞ্জের এক কর্মকর্তা বলেন, সোমবার তারা ১২১ টাকা ৫০ থেকে ৭০ পয়সায় ডলার কিনেছেন। বিক্রি হচ্ছে ১২২ টাকা থেকে ১২২ টাকা ৫০ পয়সা দরে। তিনি বলেন, কয়েক দিন অফিস বন্ধের পর ডলারের বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়েছে। সে তুলনায় সরবরাহ কম। বন্ধের আগে ১২১ টাকা কিনে বিক্রি করেন ১২১ টাকা ৩০ পয়সায়। একই চিত্র দেখা গেছে দিলকুশা, ফকিরাপুল ও পল্টন এলাকায়।
Advertisement
একই কথা বলছেন পল্টন এলাকার মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীরা। এলাকাটির এক ব্যবসায়ী জানান, এর আগে ১২১ টাকা থেকে ১২১ টাকা ৪০ পয়সার মধ্যে বেচাবিক্রি হয়েছে। এখন বন্ধের পর তারাও ডলার সংগ্রহ করতে পারেননি। আবার চাহিদাও বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই সংকট থাকলে দর বাড়ে। এখন ১২২ টাকা থেকে ১২৩ টাকার মধ্যে বিক্রি চলছে। তবে দর বেশি চাইলেও ১২২ টাকা ৫০ পয়সাতেই বিক্রি বেশি হচ্ছে। যেখানে কেনা দামও বেড়েছে।
আরও পড়ুন
রিজার্ভ থেকে ৭ মাসে ৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রি ডলার সংকটে নেতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতেচলতি বছরের মে এবং জুন মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। ডলারের দর বাড়ানোর পর মে মাসে আসে ২২৫ কোটি ডলার এবং জুন মাসে ২৫৪ কোটি ডলার। চলতি মাস জুলাইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত ব্যাংকিং চ্যানেলে ভালো রেমিট্যান্স আসে। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আর তিন কার্যদিবস সাধারণ ছুটিসহ ৫ দিন ব্যাংক বন্ধের পর থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহে ধীরগতি চলে আসে।
চলতি মাস জুলাই এর ১৯ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত ১০ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে মাত্র ২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ২ কোটি ৩৫ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত এসেছিল ১৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার। সে হিসাবে জুলাই মাসের প্রথম ১৮ দিনে প্রতিদিন গড়ে ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। শুরুর ১৮ দিনের ধারা বজায় থাকলে পুরো মাসে আড়াই বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসার কথা ছিল।
Advertisement
ইএআর/এমএইচআর/এমএস