কারো কারো অভিনয়ও হয়ে উঠতে পারে কবিতা। যেমন ববিতার। বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তিতুল্য অভিনেত্রী তিনি। সাদাকালো সিনেমা তার অভিনয়ে হয়ে উঠত রঙিন। আর সিনেমায় রঙিন যুগ আসার পর যা হল, সেসব তো লেখাই আছে দৃশ্যে দৃশ্যে।
Advertisement
উপমহাদেশের খ্যাতিমান নির্মাতা সত্যজিতের ঢাকাই নায়িকা ববিতা। আজ তার ৭১তম জন্মদিন। কদিন আগেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে বিশ্রাম নিচ্ছিলিন, আর অপেক্ষা করছিলেন আজকের দিনে শুভেচ্ছাসিক্ত হতে।
রূপালি পর্দায় ববিতাকে দেখে অনেক নারী উজ্জীবিত হয়েছেন। জীবনকে নতুন করে চিনতে শিখেছেন। তার অভিনয় প্রভাব রাখতো মানুষের মনে। তখনকার দিনে বাংলা সিনেমাকে এ দেশের মানুষ করে নিয়েছিল জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সিনেমার কথা উঠলেই প্রিয় নায়িকা ববিতার নামটিও উঠে আসতো। দেশীয় সিনেমাকে ইন্ডাস্ট্রির পর্যায়ে নিয়ে যেতে যাদের অবদান ছিল, ববিতা তাদের অন্যতম। শুধু তাই নয়, বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে ঢাকাই সিনেমার নাম লিখলে ববিতার কথাও লিখতে হবে আজও। সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন ববিতা। সেই ১৯৭৩ সালের কথা। ভীষণ প্রশংসিত হয়েছিল ছবিটি। আজও কালজয়ী সিনেমাটিকে মানুষ মনে রেখেছে।
আরও পড়ুন:ববিতার শেষ ছবি ‘পুত্র এখন পয়সাওয়ালা’চিত্রনায়িকা ববিতাকে ‘আজ ভালোবাসা জানানোর দিন’১৯৭৩ সালে ২৩তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পায় সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’। তখন থেকেই ববিতা হয়ে যান বৈশ্বিক তারকা। বাংলা সিনেমার মহাতারকা বললে তাকে নিয়ে কি বেশি বলা হবে? হয়তো না। সত্তর এবং আশির দশকের রূপালি পর্দার দাপুটে নায়িকা হিসেবে নিজের নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। বয়স বাড়লে শুরু করেন ভাবী ও মায়ের চরিত্র। সেসব চরিত্রকেও তিনি নিয়ে গিয়েছিলেন অনন্য উচ্চতায়।
Advertisement
১৯৫৩ সালের আজকের দিনে বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ববিতা। তার চলচ্চিত্রে আসার পেছনে বড় বোন সুচন্দার উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা ছিল। সুচন্দা অভিনীত জহির রায়হানের ‘সংসার’ চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে ববিতার অভিষেক হয় ১৯৬৮ সালে।
তার পর এগিয়ে যায় তার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার। ‘টাকা আনা পাই’, ‘স্বরলিপি’, ‘লাঠিয়াল’, ‘সূর্যগ্রহণ’, ‘নয়নমনি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’, ‘কি যে করি’, ‘এক মুঠো ভাত’, ‘অনন্ত প্রেম’, ‘বসুন্ধরা’, ‘পোকামাকড়ের ঘর বসতি’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘এখনো অনেক রাত’, ‘ম্যাডাম ফুলি’, ‘হাছন রাজা’, ‘চার সতীনের ঘর’ ‘মায়ের অধিকার’, ‘জীবন সংসার’, ‘দীপু নাম্বার টু’, ‘প্রাণের চেয়ে প্রিয়’ সিনেমাগুলো যারা দেখেছেন, তারা নিশ্চয়ই ববিতাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে হৃদয়ে জায়গা করে দিয়েছেন। আজ জন্মদিনে সিনেমাগুলোর কথা মনে করিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেখা না থাকলে দেখে নিতেই পারেন ববিতা অভিনীত কোনো একটি সিনেমা।
এমএমএফ/আরএমডি/জেআইএম
Advertisement