আইন-আদালত

শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি না করার নির্দেশনা চেয়ে রিটের আদেশ মঙ্গলবার

আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি না করার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনের ওপর আদেশের জন্য মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

Advertisement

সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে আবেদনটির ওপর শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এসএম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জহিরুল হক (জেড আই) খান পান্না, ব্যারিস্টার সারা হোসেন এবং ব্যারিস্টার অনীক আর হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ (এসকে) মোরশেদ ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাছান। শুনানিতে তাদের সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। এছাড়া অ্যাডভোকেট আজাহার উল্লাহ ভুঁইয়া শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন। এরপর আদালত এ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্যে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) পরবর্তী ধার্য করেন।

এর আগে সকালে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিন প্রীতম ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা লিপি। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ (আইজিপি) সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে। তাদের পক্ষে রিটটি করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক।

Advertisement

আবেদনে সম্প্রতি কোটা আন্দোলন ঘিরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের যেসব স্বজনকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মুক্তির নির্দেশনা চেয়েও আর্জি জানানো হয়।

আরও পড়ুন>>>

আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি না করার নির্দেশনা চেয়ে রিট ঢাবি শিক্ষার্থীদের হয়রানি করলে প্রক্টর অফিসে জানানোর আহ্বান

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোর্শেদ বলেন, দুদিক থেকে ইনজুরি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও আক্রান্ত।

এসময় রিটকারী আইনজীবী বলেন, আটকের কথা বলে কি দিনের পর দিন রেখে দেবেন। এরপর শেখ মো. মোর্শেদ বলেন, যে ছয়জনের কথা এসেছে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ আদালতে আসেননি।

Advertisement

তখন রিটকারী আইনজীবী বলেন, আজকের সংবাদমাধ্যম দেখেন। তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী আরও বলেন, প্রতিটি ঘটনারই বিচার হবে। সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন।

শুনানিতে হাইকোর্ট বেঞ্চে বেশ কয়েকজন আইনজীবী কয়েকটি পত্রিকার কপি নিয়ে ডিবিতে তাদের আটকের বিষয়টি নজরে এনে তাদের মুক্তি দেওয়ার আর্জি জানান।

রিটের বিষয়ে রিটকারী আইনজীবী মানজুর আল মতিন সাংবাদিকদের জানান, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে এবং ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে(ডিবি) আটক থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে আবেদনে। আবেদনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আত্মীস্বজনকে ছেড়ে দেওয়ারও নির্দেশনা চাওয়া হয়। রিটটি আজ শুনানি হয়েছে। মঙ্গলবার এ বিষয়ে আদেশের জন্য রেখেছেন হাইকোর্ট। ওইদিন আরও শুনানি হবে।

আরও পড়ুন>>>

সহিংসতায় ১৪৭ জন মারা গেছেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কর্মসূচি প্রত্যাহার

সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ সারাদেশে ব্যাপক সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ অনেকে গুলিবিদ্ধ হন। আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১৪৭ জনের প্রাণহানির তথ্য পেয়েছে সরকার। রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে নিহতের সংখ্যা নিয়ে এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ১ জুলাই শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলন শুরু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ১৫ জুলাইয়ের আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের পর ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আন্দোলন চলাকালে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।

এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয়জন সমন্বয়ক এক ভিডিও বার্তায় সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। ডিবি কার্যালয়ে ধারণ করা এ ভিডিও বার্তা গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

এফএইচ/এমকেআর/এমআইএইচএস/জেআইএম