সমাজতান্ত্রিক শাসনের পঁচিশ বছরে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন ভেনেজুয়েলার নাগরিকরা। স্থানীয় সময় রোববার (২৮ জুলাই) সকাল থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। ফলাফল প্রকাশ হতে পারে সোমবার।
Advertisement
এবারের নির্বাচনে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো তার বিজয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হলেও তার জন্য চ্যালেঞ্জের বিষয় হলো- বিরোধী প্রার্থী অ্যাডমুন্ডো গনজালেস প্রচুর সমর্থন টানতে পেরেছেন। তবে যে কোনো মূল্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে মাদুরো নির্বাচনে অনিয়ম বা কারচুপি করতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গনজালেস।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাকাডোকে নির্বাচন থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও, তিনি অ্যাডমুন্ড গনজালেসের পক্ষে জোরালো প্রচারণা চালিয়েছেন।
গনজালেস একজন ৭৪ বছর বয়স্ক সাবেক কূটনীতিক। তিনি তার স্থির ও শান্ত চরিত্রের জন্য পরিচিত। এবারের নির্বাচনে তিনি ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের কাছ থেকেও সমর্থন আদায় করে নিতে পেরেছেন। তবে নির্বাচন অবাধ হবে কি না, তা নিয়ে বিরোধী দল ও পর্যবেক্ষকরা প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলছেন, নির্বাচনী কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ও বিরোধী দলের কর্মীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
Advertisement
২০১৮ সালে পুনঃনির্বাচন দিয়েছিলেন মাদুরো। তবে সে নির্বাচনকে জালিয়াতি বলে গণ্য করেছিল যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ। তবে গনজালেস তার দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বিশ্বের সবচেয়ে স্বচ্ছ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। আবার তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, এবার তিনি পরাজিত হলে দেশে ‘রক্তগঙ্গা’ বয়ে যাবে।
২৫ বছর ধরে ভেনেজুয়েলার ক্ষমতায় রয়েছে মাদুরোর সমাজতান্ত্রিক পিএসইউভি পার্টি এবারই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। মাদুরোর আগে এই দলটির নেতৃত্বে ছিলেন প্রয়াত ও এক সময়ের আলোচিত নেতা হুগো শ্যাভেজ।
শ্যাভেজ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর ২০১৩ সাল থেকে পরপর দুই মেয়াদে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাদুরো। এবার তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। আগের দুটি নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে বিপুল কারচুপি ও বিরোধীদের দমন-পীড়নের অভিযোগ উঠেছিল।
মাদুরো সরকারের আমলে ভেনেজুয়েলার অর্থনীতিতে ধস নেমেছে, দেশের এক-তৃতীয়াংশ জনগোষ্ঠী বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে ও যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের মারাত্মক অবনতি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ ভেনেজুয়েলার জ্বালানিশিল্পের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যা দেশের তেল শিল্পকে পঙ্গু করে দিয়েছে।
Advertisement
তবে মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি শান্তি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নিশ্চয়তা দেবেন। সেই সঙ্গে তেল রপ্তানির উপর ভেনেজুয়েলার নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনবেন।
সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা
এসএএইচ