ইসলামের প্রচার-প্রসার যখন দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে, ঠিক সে সময়ে অবিশ্বাসী কাফের ও পৌত্তলিকদের সঙ্গে ইয়াহুদি সম্প্রদায়ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাদের ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। এমনকি বদর এবং ওহুদ যুদ্ধ পরিচালনা। কিন্তু কোনো যুদ্ধেই মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করতে পারেনি, উপরন্তু ব্যর্থ এবং শোচনীয়ভাবে পরাজয় বরণ করেছে। তারপর ইয়াহুদিরা মুসলমানদের কাফের রূপে দেখতে চাওয়ার মানসিকতা পোষণ করে। আল্লাহ তাআলা ইয়াহুদিদের মানসিকতার ব্যাপারে মুসলমানদের সতর্ক করতে কুরআনের উল্লেখ করেন-আহলে কিতাবদের অধিকাংশই তোমাদেরকে কোনোক্রমে ঈমান থেকে আবার কুফরির দিকে ফিরিয়ে নিতে চায়। যদিও হক তাদের কাছে প্রকাশ হয়ে গেছে, তবুও নিজেদের হিংসাত্মক মনোবৃত্তির কারণেই এটি তাদের কামনা। এর জবাবে তোমরা ক্ষমা ও উপক্ষোর নীতি অবলম্বন করো। যতক্ষণ আল্লাহ নিজেই এর কোনো ফয়সালা করে দেন। নিশ্চিত জেনে রেখো, আল্লাহ সবকিছুর ওপর ক্ষমতাশালী। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১০৯)আয়াত নাজিলের কারণ>> ওহুদের যুদ্ধের পর ইয়াহুদিরা হজরত হুজাইফা ইবনে ইয়ামান এবং ইবনে ইয়াসে রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলেছিল, যদি তোমরা সত্যের ওপর থাকতে, তবে তোমরা পরাজিত হতে না। অতএব তোমাদের উচিত হলো আমাদের ধর্মে চলে আসা। কেননা এটিই হিদায়াতের পথ। এ ঘটনার পরই এ আয়াত নাজিল হয়। (তাফসিরে মাজহারি)>> হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত আছে যে, হাই ইবনে আখতাব এবং আবু ইয়াসের ইবনে আখতার- এ দু`জন কুখ্যাত ইয়াহুদি মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুশমন ছিল। এরা সর্বদা মুসলমানদের উন্নতির কারণে হিংসানলে জ্বলতো এবং তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করতো ইসলামকে প্রতিরোধ করতে এমনকি মুসলমানদেরকে পুনরায় কাফের রূপে দেখতে চাইতো। তাদের সম্পর্কেই এ আয়াত নাজিল হয়। (তাফসিরে রুহুল মাআনি)সুতরাং ইসলামের জয়-পরাজয় কোনো বিষয় নয়, কুরআন আল্লাহর কিতাব, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবি ও রসুল এবং ইসলাম একমাত্র মনোনীত জীবন ব্যবস্থা- এ বিশ্বাস মনে মননে গ্রহণ করাই হলো মুসলমানের জীবনের একমাত্র কাজ।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সকল প্রকার ধোকা-প্রতারণা, অর্থলোভসহ যাবতীয় ফেতনা থেকে হিফাজত করে ইসলামের অটল ও অবিচল থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/আরআইপি
Advertisement