জাতীয়

রমজানে মাংস বিক্রির নামে নেওয়া ব্রাহমা গরু বিক্রি হয় কোরবানিতে

২০২১ সালের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি নিষিদ্ধ ব্রাহমা জাতের ১৮টি গরু এনেছিল আলোচিত সাদিক অ্যাগ্রো। তখন বিমানবন্দরে সেই গরুগুলো জব্দ করে কাস্টমস বিভাগ। পরে সেগুলো প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে হস্তান্তর করা হয়। সম্প্রতি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সেসব গরু সাদিক অ্যাগ্রোকে ফিরিয়ে দেয়। এরমধ্যে তিনটি গরু মারা যায়। বাকি ১৫টি গরুর মধ্যে ৯টি গত কোরবানির ঈদে প্রায় ৯ কোটি টাকায় বিক্রি করা হয়।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্রাহমা জাতের গরুগুলো নিজের কবজায় নিতে অভিনব কৌশল হাতে নেয় সাদিক অ্যাগ্রোর মালিকপক্ষ। গত রমজানে সুলভ মূল্যে মাংস বিক্রির কথা বলে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাছ থেকে গরুগুলো নিয়ে নেয় সাদিক অ্যাগ্রো। যদিও এতে অনুসরণ করা হয়নি যথাযথ নিলাম প্রক্রিয়া।

এরপর রমজান মাসে নিষিদ্ধ ব্রাহমা গরুর পরিবর্তে প্রতারণার মাধ্যমে অন্য গরুর মাংস বিক্রি করে সাদিক অ্যাগ্রো। আর জবাইয়ের জন্য নেওয়া ব্রাহমা গরুগুলো মাংস হিসেবে বিক্রি না করে কোরবানির ঈদে ৯টি গরু ৯ কোটি টাকায় বিক্রি করেন খামারের মালিক।

সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দুদকের

দুদকের অভিযানে কোরবানির ঈদের পর অবশিষ্ট ছয়টি গরু উদ্ধার করা হয় সাদিক অ্যাগ্রোর খামার থেকে। প্রতারণার অভিযোগে খামারের দুই মালিক ইমরান হোসেন ও তৌহিদুল আলমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

Advertisement

আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। তারা নিজেরা লাভবান হওয়ার ও অন্যকে লাভবান করার উদ্দেশে দেশীয় দুগ্ধ ও গো-শিল্পের জন্য ক্ষতিকর ও আমদানি নিষিদ্ধ গরু পালনের জন্য ভুয়া অনুমোদনপত্র তৈরি করেছিলেন।- দুদকের মামলার অভিযোগ

গত ১৬ জুলাই দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলাটি করেন। মামলার অন্য পাঁচ আসামির সবাই প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে সাভার কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের পরিচালক মো. মনিরুল ইসলামকে।

অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উৎপাদন বিভাগের পরিচালক এ বি এম খালেদুজ্জামান, বায়ার অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম, সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ খান ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক এ বি এম সালাহ উদ্দিন।

সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ইমরান হোসেন

Advertisement

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। তারা নিজেরা লাভবান হওয়ার ও অন্যকে লাভবান করার উদ্দেশে দেশীয় দুগ্ধ ও গো-শিল্পের জন্য ক্ষতিকর ও আমদানি নিষিদ্ধ গরু পালনের জন্য ভুয়া অনুমোদনপত্র তৈরি করেছিলেন।

আরও পড়ুনএক কোটি ৩১ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে সাদিক অ্যাগ্রোফের সাদিক অ্যাগ্রোতে দুদক, ৬ ব্রাহমা গরু জব্দব্রাহমা জাতের গরু কি আসলেই বাংলাদেশে নিষিদ্ধ?সাদিকের ইমরান-প্রাণিসম্পদের কর্তাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সেখানে আরও বলা হয়, ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে আমদানি করা গরু শুল্ক বিভাগ আটক করেছিল। সরকারের অনুকূলে সেগুলো বাজেয়াপ্ত করা হয়। সেসব গরুর মাংস গত রমজান মাসে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সুলভ মূল্যে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা অমান্য করা হয়। এসব গরু জবাই না করে দণ্ডবিধি ও দুর্নীতি দমন আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন আসামিরা।

গরু খুঁজতে বেরিয়ে আসে ছাগল-কাণ্ড

সবশেষ গত কোরবানির ঈদ ঘিরে সাদিক অ্যাগ্রোর বংশ মর্যাদাসম্পন্ন গরুর বিজ্ঞাপনে সবার নজর কাড়ে বিশাল আকারের ব্রাহামা গরু। এরপর কোটি টাকা দামের বংশ মর্যাদাসম্পন্ন গরু ও ১৫ লাখ টাকা দামের ছাগল বিক্রি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় আসে খামারটি। ১৫ লাখ টাকার ছাগলের ক্রেতা ছিলেন রাজধানীর ধানমন্ডির এক তরুণ। পরে জানা যায় ওই তরুণ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শীর্ষ কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে। ছাগল-কাণ্ড নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যেই এনবিআরের ওই কর্মকর্তার অবৈধ সম্পদের তথ্য উঠে আসে গণমাধ্যমে। বর্তমানে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালাচ্ছে দুদক।

ব্রাহমা গরুর পরিবর্তে অন্য গুরুর মাংস বিক্রি করে পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে সেগুলো আত্মসাৎ করেন আসামিরা। এ কাজে সাদিক অ্যাগ্রোকে সহায়তা করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের শীর্ষ কর্মকর্তারা

সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ইমরান হোসেন গবাদিপশুর খামার মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সভাপতি। অনুমতি না থাকা ও খালের জায়গা দখল করায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) অভিযান চালিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সাদিক অ্যাগ্রোর খামারের একাংশ ভেঙে দেয়। এছাড়া মোহাম্মদপুর ও সাভারে অভিযান চালিয়ে আমদানি নিষিদ্ধ ব্রাহমা গরুর খোঁজ পায় দুদক।

গত ২৭ জুন দুপুরে খামারটিতে অভিযান শুরু করে ডিএনসিসির ভ্রাম্যমাণ আদালত। খামারের পশ্চিম অংশে অফিস ভাঙার মাধ্যমে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। একই সঙ্গে তখন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় ফার্মের বিদ্যুৎ সংযোগও।

মিথ্যার ফুলঝুড়ি ইমরানের, ব্রাহমার নামে অন্য গরুর মাংস বিক্রি!

গত ১৮ ও ১৯ এপ্রিল ঢাকার শেরেবাংলা নগরের পুরাতন বাণিজ্যমেলার মাঠে গবাদিপশুর মেলায় প্রায় ১৩০০ কেজি ওজনের একটি ব্রাহমা জাতের গরু প্রদর্শন করেন ইমরান হোসেন। বংশ মর্যাদাসম্পন্নসহ নানা বিশেষণ যোগ করে গরুটির মূল্য হাঁকেন এক কোটি টাকা। এছাড়া ঈদুল আজহার আগে ব্রাহমা গরু বিপুল দামে বিক্রির কথা বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ইউটিউবারের কাছে বলেন ইমরান।

আমদানি নিষিদ্ধ ব্রাহমা জাতের ১৮টি গরু কাস্টমসে জব্দ হওয়ার পর সেগুলো ফিরে পেতে উচ্চ আদালতে রিট করে সাদিক অ্যাগ্রো কর্তৃপক্ষ। তবে আদালতের রায় তাদের বিপক্ষে যায়। তারপর গরুগুলো প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জিম্মায় নিয়ে সাভারের কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে পাঠানো হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের ভাষ্য, গত রমজান মাসে কিছুটা কম দামে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। সেখানে মাংস সরবরাহ করে ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন। তারা মোট চাহিদার অর্ধেক মাংস বাবদ কম দামে (জীবন্ত অবস্থায় ভ্যাটসহ কেজিপ্রতি ২৯৩ টাকা) ৪৮৮টি গরু সরবরাহ করে। গরুগুলো নেওয়া হয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বিভিন্ন খামার থেকে। যার মধ্যে ছিল জব্দ হওয়া ১৫টি ব্রাহমা গরু।

অভিযোগ আছে, যথাযথ নিলাম প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ইমরান হোসেন গত রমজানে মাংস বিক্রির নামে গরুগুলো কেনেন। কিন্তু রমজানে ব্রাহমা গরুর নাম করে তার বদলে অন্য গরুর মাংস সরবরাহ করেন তিনি। পরে ঈদুল আজহার সময় মোটা অংকের টাকায় ৬টি ব্রাহমা গরু বিক্রি করে খামারটি। দুদকের অনুসন্ধানেও এমন অভিযোগের সত্যতা মেলে।

তবে ইমরান হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাছ থেকে কিনলেও শর্তে এমন কিছু উল্লেখ ছিল না যে ব্রাহমা গরুগুলো মাংস হিসেবেই বিক্রি করতে হবে।

সাদিক অ্যাগ্রোতে উচ্ছেদ অভিযান

দুদকের অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা ব্রাহমা জাতের গরুগুলো রমজানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক মাংস হিসেবে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে জনগণের মাঝে সুলভ মূল্যে বিক্রির সরকারি সিদ্ধান্ত থাকা সত্ত্বেও আসামিরা তা সম্পূর্ণরূপে অমান্য করেন। তারা সব বিধিবিধান লঙ্ঘন করে কমিটির মাধ্যমে নিলাম না করে ব্রাহামা জাতের ১৫টি গরু (যার মূল্য কমবেশি ১৫ কোটি টাকা) রেকর্ডপত্রে জবাই দেখিয়ে বাস্তবে জবাই না করে আত্মসাৎ করেছেন।

আসামিরা দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলেও মামলার অভিযোগে উল্লেখ করে দুদক।

যেভাবে হলো এ অনিয়ম

সাভারের কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে ব্রাহমা জাতের গরুগুলো তিন বছর লালন-পালন করা হয়। যেখানে প্রতি মাসে খাবার, বাসস্থান, বিদ্যুৎ, পানি ও শ্রমিক বাবদ প্রতিষ্ঠানটির প্রায় তিন লাখ ৮২ হাজার টাকা খরচ হয়।

গরুগুলো সরকারের খামারে ছিল। সেগুলো কোনো নিলাম না করেই সাদিক অ্যাগ্রোকে দেওয়া হয়েছে। আমরা ঘটনাটি জানতে পারার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি।- দুদক মহাপরিচালক মো. শাহরিয়াজ

ইমরান হোসেনের রিটের বিপরীতে উচ্চ আদালত বেসরকারি পর্যায়ে গবাদি পশুর কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম পরিচালনার সংশোধিত নীতিমালা-২০১৬ এর আলোকে দেশীয় দুগ্ধশিল্পের জন্য জাত উন্নয়ন ও সুরক্ষা বিবেচনায় ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি নিয়ন্ত্রণ বিবেচনায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষে রায় দেন। একই সঙ্গে জব্দ গরুগুলো বিধি মোতাবেক প্রজনন এবং মাংস উৎপাদনে ব্যবহারের আদেশ দেন আদালত।

পরবর্তীকালে জীবিত ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরু প্রজনন অনুপযোগী, কিন্তু মাংস খাওয়ার উপযোগী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর রমজান মাসে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে সুলভ মূল্যে মাংস বিক্রির উদ্দেশে জব্দ ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরু বিধি মোতাবেক নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়।

ব্রাহমা জাতের গরু

আসামি ইমরান হোসেন ও তৌহিদুল আলম কূটকৌশলের মাধ্যমে চার বছর পর গরুগুলো বুঝে নেন। রমজানে মোট ৪৪৮টি গরু জবাই করে সুলভ মূল্যে মাংস বিতরণের কথা ছিল তাদের। যার মধ্যে অনুমোদন ছাড়াই আমদানি করা ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরুও ছিল। যেগুলো প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাছ থেকে বিধিবহির্ভূতভাবে প্রাপ্ত হয় সাদিক অ্যাগ্রো।

আরও পড়ুনভেঙে দেওয়া হচ্ছে সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মশাহজালালে ব্রাহমা জাতের ১৮ গরু জব্দ১৫ লাখ টাকার সেই ছাগল দৈনিক খায় দুই কেজি আপেল

কিন্তু রমজানে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। ব্রাহমা গরুর পরিবর্তে অন্য গরুর মাংস বিক্রি করে পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সেগুলো আত্মসাৎ করেন আসামিরা। এ কাজে সাদিক অ্যাগ্রোকে সহায়তা করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

পরে আগারগাঁওয়ে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীতে অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আত্মসাৎ করা গরুগুলো প্রদর্শন করা হয়। মূলত, ঈদ ঘিরে কোরবানির পশুর হাটে উচ্চ দামে বিক্রির উদ্দেশেই গরুগুলো মেলায় প্রদর্শন করা হয়েছিল।

সাদিক অ্যাগ্রোতে দুদকের অভিযান

গত ৩ জুলাই দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট থেকে পরিচালিত অভিযানে মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রোর খামার থেকে ব্রাহমা জাতের ৬টি গরু উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। অন্য ৯টি গরু ঈদের সময় প্রতিটি প্রায় কোটি টাকা দামে বিক্রি করে দেওয়ার তথ্য পায় দুদক। এর দুদিন আগে ১ জুলাই প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের খামার ও সাদিক অ্যাগ্রোতে অভিযান চালায় দুদক।

তখন সংস্থাটি জানিয়েছিল, তথ্যের ভিত্তিতে সাদিক অ্যাগ্রোতে দুদকের দল গিয়ে ছয়টি ব্রাহমা গরুর সন্ধান পায়, যা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা হয়েছে। ব্রাহমা গরু আমদানি নিষিদ্ধ। তবে অভিযানের সময় সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ও ব্যবস্থাপক কাউকে পাওয়া যায়নি। অভিযান শেষে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, জব্দ গরুগুলো প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জিম্মায় রাখা হয়েছে।

সাদিক অ্যাগ্রোর আলোচিত সেই ছাগল

এ বিষয়ে দুদকের মহাপরিচালক মো. শাহরিয়াজ জাগো নিউজকে বলেন, গরুগুলো সরকারের খামারে ছিল। সেগুলো কোনো নিলাম না করেই সাদিক অ্যাগ্রোকে দেওয়া হয়েছে। আমরা ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি।

সাদিক অ্যাগ্রোর এমন অনিয়ম-জালিয়াতির পেছনে অন্য কোনো শক্তির হাত আছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসব খতিয়ে দেখবেন।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ব্রাহমা জাতটির উৎপত্তি ভারতে। পরবর্তীকালে যুক্তরাষ্ট্রে আরও দু-তিনটি জাতের সংমিশ্রণে এ জাতটিকে উন্নত করা হয়। দুই থেকে আড়াই বছরের দেশি গরুর ওজন ২৫০ থেকে ৩৫০ কেজি হলেও একই বয়সী একটি ব্রাহমা জাতের গরুর ওজন হয় ৮০০ থেকে ১ হাজার কেজি।

ব্রাহমা জাতের গরুর মাংস তুলনামূলক বেশি হয়। কিন্তু বাংলাদেশে ব্রাহমা গরু পালনের অনুমতি দেওয়া হলে দুধ বেশি দেওয়া গরু পালন কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণেই ব্রাহমা জাতের গরু আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে জানায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

এসএম/এমকেআর/জেআইএম