সোশ্যাল মিডিয়া

রেমিট্যান্স ও প্রবাসীদের দেশে ফেরা নিয়ে অপপ্রচার হচ্ছে

'রেমিট্যান্স না পাঠালে দেশে আসতে দেওয়া হবে না'- এমন একটি মিথ্যা তথ্য ও গুজব সোশ্যাল মিডিয়াতে অপপ্রচার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এ ধরনের গুজব ও অপপ্রচার বিশ্বাস না করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

শুক্রবার দিনগত রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।

জুনাইদ আহমেদ পলক লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জনবান্ধব সরকার সবসময় প্রবাসীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে আমাদের সকলকে সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে। সকল ধরনের গুজব ও অপপ্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে এবং অপপ্রচারকারীদের রুখতে হবে।’

আরও পড়ুন ফেসবুক-টিকটকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি ওয়াই-ফাইয়ের গতি বাড়াবেন যেভাবে বিমানবন্দরে রেমিট্যান্স প্রেরণকারী প্রবাসীরা হয়রানির শিকার হন ঈদের আগে রেমিট্যান্সে সুবাতাস, এক মাসে এলো ২৬ হাজার কোটি টাকা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো কিছু শেয়ার করার আগে সত্য-মিথ্যা যাচাই করার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তিনি হ্যাশট্যাগ দিয়ে StopPropaganda, PreventPropaganda, Propaganda, গুজব, গুজব_রোধকরি, গুজব_বন্ধকরি, গুজব_বয়কটকরি’ কথা লিখেছেন।

Advertisement

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পৃথক স্ট্যাটাস দিয়ে ফেসবুক, টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

আরও পড়ুন প্রবাসীদের বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান মালয়েশিয়ায় হুন্ডির দাপট, বাড়ছে না প্রবাসী আয় মিথ্যা গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না, মূলধারার গণমাধ্যম পড়ুন: পলক ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে বিটিআরসির নির্দেশ

তিনি লিখেছেন, ফেসবুক-টিকটক তাদের নিজেদের পলিসি গাইডলাইনস নিজেরাই মেনে চলে না। তারা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের ভূমিকা নেয়। অথচ আমাদের দেশে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে, পুলিশকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করার ছবি-ভিডিওতে প্রকাশ করে উসকানি ছড়িয়ে দিচ্ছে, যেগুলোকে তারা ব্লক করছে না। এগুলোকে তারা ছড়িয়ে দিচ্ছে, এমনকি তারা সেই কন্টেন্টের বুস্টিং থেকে আয় করছে, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী আরও লিখেন, আগামী তিন দিনের মধ্যে ফেসবুক-টিকটকসহ সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে চিঠি দিয়ে আলোচনায় বসা হবে। তারা যদি সেখানে অংশ নিয়ে সন্তোষজনক জবাব না দিতে পারে, তবে তাদের প্রতি আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এদিকে নিজেদের প্ল্যাটফর্মে গুজব, অপপ্রচার, উসকানি ও সহিংসতামূলক প্রচার-প্রচারণা ঠেকাতে কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে, ফেসবুক-টিকটক কর্তৃপক্ষের কাছে তার জবাব চাইবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। তারা জবাব না দিলে অথবা তা সন্তোষজনক না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বিটিআরসি।

Advertisement

আরও পড়ুন মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে ১৯ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ ফেসবুক-টিকটক-ইউটিউবকে শেষ হুঁশিয়ারি পলকের ইন্টারনেট বন্ধের মধ্যে যা যা হলো দেশে আপাতত বন্ধই থাকছে ফেসবুক

বিটিআরসির সংশ্লিষ্ট দুটি উইংয়ের (শাখা) দুজন পরিচালক জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এছাড়া বুধবার (২৪ জুলাই) সংবাদ সম্মেলনেও বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রোববার (২৮ জুলাই) বিটিআরসির সঙ্গে বসে ঠিক করা হবে ফেসবুক ও টিকটক কর্তৃপক্ষকে কীভাবে, কী ধরনের চিঠি দেওয়া হবে। বার্তা পাঠানোর পর তাদের তিনদিনের মধ্যে বিটিআরসিতে হাজির হয়ে জবাব দিতে বলা হবে।’

কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে- তা নিয়ে জানতে চাইলে পলক বলেন, ‘তাদের জবাব পেলে আমরা তা বিশ্লেষণ করে দেখবো। কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কী রেসট্রিকশন (নিষেধাজ্ঞা) দেওয়া হবে, সেটা তখন ভাবা হবে।’

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া; বিশেষ করে ফেসবুক ও টিকটকের কোনো জবাবদিহি নেই। না বাংলাদেশ সরকারের কাছে আছে, না তাদের অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে আছে। ফেসবুক-টিকটক তাদের যে প্রাইভেসি সেটিংস কিংবা পলিসি গাইডলাইন যেগুলো দিয়ে রাখে, এগুলো একেবারেই তারা নিজেরাও মানে না।’

‘তারা একেক দেশের জন্য একেক ধরনের আচরণ করে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ কেন্দ্র করে বিভিন্ন অপপ্রচার হচ্ছে, সে বিষয়ে তাদের এক ধরনের অবস্থান। ইসরায়েল যে ফিলিস্তিনের ওপর নির্মম অত্যাচার চালাচ্ছে, সেখানে ফেসবুক বা অন্যান্য যে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম আছে, তাদের ভূমিকাটা কী?’

‘অথচ আমাদের এখানে র‌্যাবের গাড়ি ভাঙচুর করছে, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করছে, পুলিশকে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসীরা হত্যা করছে; সেই ভিডিওগুলো ছড়িয়ে উসকানি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো ব্লক করা হচ্ছে না। যে গ্রুপগুলো থেকে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক তথ্য-উপাত্ত, ভয়ানক হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলো বিটিআরসি থেকে বারবার বলার পরও তারা ব্লক করছে না।’ বলেন প্রতিমন্ত্রী।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে গত ১৬ জুলাই থেকে মোবাইলে ফোরজি ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করা হয়। এরপর ১৮ জুলাই রাত থেকে বন্ধ হয়ে যায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা। পাঁচদিন পর ২৩ জুলাই রাতে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করে সরকার। ২৪ জুলাই রাত থেকে সব জায়গায় ব্রডব্যান্ড চালু করে দেওয়া হয়।

বিটিআরসি জানিয়েছে, আগামী রবি বা সোমবার (২৮ বা ২৯ জুলাই) মোবাইল ইন্টারনেট চালু করে দেওয়া হতে পারে। তবে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো আপাতত বন্ধই থাকছে।

তবে বিটিআরসি ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যম বন্ধ রাখলেও ভিপিএন ব্যবহার করে বহু ব্যবহারকারী এসব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছে। পর্যায়ক্রমে ভিপিএন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে।

এমএমএআর/জিকেএস