বিনোদন

চরকিতে কাজ করে কলকাতায় নিষিদ্ধ পরিচালক

বেশ ঘটা করে গেল বছর চরকি ঘোষণা দিয়েছিল কলকাতার শিল্পী-কুশলীদের সঙ্গে কাজ করার। কিন্তু কাজ শুরুর আগেই বাধে বিপত্তি। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আইনে ওপার বাংলায় কাজ করতে গেলে চরকিকে চারগুণ কর বা অর্থ দিতে হবে। হিন্দি ভাষাভাষীদের জন্য সেই অর্থের পরিমাণ আরও বেশি। এ অবস্থায় হাত গুটিয়ে নেয় চরকি।

Advertisement

কলকাতার ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসবে বলেও জানায় চরকি। কিন্তু কেউই নাকি যোগাযোগ করেনি আর। তার মধ্যেই ‘কিসমিস’ ও ‘দিলখুশ’ ছবির পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায় ও মধুরা পালিত নামের এক ক্যামেরাম্যান বাংলাদেশে এসে চরকির সঙ্গে কাজ করেছেন গোপনে। সেই খবর জানতে পেরে দুজনকেই তলব করেছে কলকাতার পরিচালকদের ফেডারেশন।

তাদের কাছ থেকে সন্তোষজনক বক্তব্য না মেলায় তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পরিচালক রাহুলকে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এই তিন মাস সিনেমা নির্মাণ তো দূর, শুটিং সেটেও আসতে পারবেন না তিনি। যার ফলে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, অপরাজিতা আঢ্যর মতো স্টারদের নিয়ে তৈরি হতে চলা সিনেমাটি বানাতে পারছেন না রাহুল। আসছে দুর্গাপূজায় এটি মুক্তির কথা। সেই লক্ষ্যেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছিল প্রযোজনা সংস্থা। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, রাহুল এ ছবি বানাতেই পারবেন না।

এই সিদ্ধান্তে বেশ হইচই শুরু হয়েছে ওপার বাংলার ইন্ডাস্ট্রিতে। ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া ও ফেডারেশন অব সিনে-টেকনিশিয়ান অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পরিচালক থেকে শুরু করে অভিনেতারাও ক্ষোভ ঝাড়ছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। কানাঘুষা চলছিল, ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যপদ ছেড়ে দিতে পারেন বেশ কয়েকজন পরিচালক। রাহুলের শাস্তি না কমানো হলে তারা সদস্যপদ ছেড়ে দেবেন, এই মর্মে শুরু হলো সই সংগ্রহ করার কাজ। জানা যাচ্ছে, সংখ্যাটা প্রায় ৭৫। পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অঞ্জন দত্ত, অরিন্দম শীল, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, রাজ চক্রবর্তীর মতো নামী পরিচালক রয়েছেন সেই তালিকায়।

Advertisement

পরে বিষয়টির সুরাহা করতে মিটিংয়ে বসে ফেডারেশন অব সিনে-টেকনিশিয়ান অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া ও ডিরেক্টরদের গিল্ড। মিটিং শেষে সবাইকে ফেডারেশনের ওপর আস্থা রাখার বার্তা দিয়ে ডিরেক্টর্স গিল্ডের জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের বক্তব্য, ছবি যেন বন্ধ করা না হয়। রাহুল পরিচালনা না করে অন্য কোনও পদে থাকলে আমাদের আপত্তি থাকবে না। আমরা চাই সুষ্ঠুভাবে কাজটা সম্পন্ন হোক।’

মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়, রাহুলের আসন্ন ছবি তার বদলে সৌমিক হালদার পরিচালনা করবেন। আর ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসারের ভূমিকায় থাকবেন রাহুল। কিন্তু সেটাও মানতে নারাজ পরিচালক ও শিল্পীরা। এই মিটিংয়ে রাহুলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সমস্ত বিধি মেনেই তিনি শুটিং করেছিলেন এবং ফেডারেশনের অর্থও পরিশোধ করেছিলেন। তবু তার সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে।

রাহুলের বক্তব্যের পর সবাই চাইছেন তার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হোক। রাহুলকেই তার সিনেমাটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হোক। ফেডারেশন যদি তাদের অনুরোধ না মানে, তাহলে ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত এই পরিচালকরা ইস্তফা দেবেন।

ওপার বাংলার পরিচালকদের একজোট হয়ে রাহুলের পাশে দাঁড়িয়ে তাকেই পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার এই দাবি কি মানবে ফেডারেশন? নাকি রাহুলের ওপর নেমে আসবে আরও কড়া কোনও সিদ্ধান্ত? এই মুহূর্তে সেটা দেখার অপেক্ষায় টলিউড ইন্ডাস্ট্রি।

Advertisement

এলএ/আরএমডি/এমএস