বগুড়ায় কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে সহিংসতায় পাঁচদিনে অন্তত ৩ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সহিংসতায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ লোকসানে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। এতে প্রতিদিন গড়ে ৫০০-৬০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বাস-মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতির প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
Advertisement
স্থানীয় সূত্র জানায়, কোটাবিরোধী আন্দোলনের কারণে বুধবার থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় দোকান খুলতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে সরকারি নির্দেশনায় কারফিউ জারি করা হয়। যার ফলে শহরে সাধারণ মানুষের চলাচল একেবারে কম ছিল। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হতে পারেননি। টানা পাঁচদিন কোনো ব্যবসায়ী দোকান খুলতে পারেননি।
শহরের স্টেশন সড়কে ৫৫-৬০টি ফলের আড়ৎ রয়েছে। এসব আড়ৎ থেকে প্রতিদিন শতাধিক টন বিভিন্ন ধরনের ফল জেলার ১২ উপজেলা ছাড়াও বাইরের ব্যবসায়ীরা কিনে নেন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ৫-৬ শতাধিক ফলের দোকান ও অর্ধশতাধিক ভ্রাম্যমাণ ফল ব্যবসায়ী এসব আড়ত থেকে ফল কিনে বিক্রি করেন। স্বাভাবিক সময়ে দেশি-বিদেশি ফল মিলে প্রতিদিন ৬০-৭০ লাখ টাকার ফল আড়তগুলো থেকে বিক্রি হয়। বুধবার থেকে আড়ত ও দোকানে মজুদ থাকা ফল পচে নষ্ট হয়ে হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শহরের সাতমাথা মরিয়ম ফল ভাণ্ডারের নাহিদুজ্জামান নাহিদ জানান, ব্যবসার টাকা ভেঙে খেতে হচ্ছে। তবে সোমবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দোকান খুলেছি। তবে বেচা বিক্রি কম।
Advertisement
বগুড়া চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি মাহফুজুল ইসলাম রাজ জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সহিংসতায় টানা পাঁচদিনে অন্তত ৩ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। যে সব ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়েছে তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সবধরনের সহযোগিতা করবে বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
বগুড়া নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী উজ্জ্বল প্রামাণিক জানান, আন্দোলন ও সহিংসতায় বগুড়ায় কারফিউ জারি হয়েছে। আমরা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারছি না। জানি না এমন অবস্থা আর কতদিন থাকবে। এভাবে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে সবদিক থেকে লোকসান গুণতে হবে।
বগুড়া বাস-মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতির হিসাবরক্ষক মিলন শেখ জানান, বিভিন্ন রুটে প্রায় দেড় হাজার বাস মালিক সমিতির অধীনে চলাচল করে। এতে গত পাঁচদিনে বগুড়ায় বাস-মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতির প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলন জানান, কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে সহিংসতার ঘটনায় অনেক প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে করে ব্যাপকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এসব ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে। আমরা চেম্বার অব কমার্স থেকে তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।
Advertisement
আরএইচ/এএসএম