কোটা আন্দোলন এবং চলমান কারফিউয়ের মধ্যেও স্বাভাবিক রয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কার্যক্রম। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গে তিন দেশের নাগরিকরা পারাপার হচ্ছেন এই চেকপোস্ট দিয়ে। তবে কমে গেছে যাতায়াতকারীদের সংখ্যা। পর্যাপ্ত গণপরিবহনের অভাবে দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা।
Advertisement
কিছুদিন আগেও বাংলাবান্ধা চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৩০০-৪০০ জন যাতায়াত করতেন। বর্তমানে এ সংখ্যা কমে ১৮০-২০০ জনে নেমেছে।
দেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় ইমিগ্রেশন বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি চেকপোস্ট। পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা এবং ভারতের ফুলবাড়ি ইমিগ্রেশন দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত, নেপাল এবং ভুটানের নাগরিকরাও যাতায়াত করতে পারেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে চেকপোস্ট খোলা রয়েছে কি না, তা নিয়ে শঙ্কিত উভয় দেশের যাত্রীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারত, নেপাল ও ভুটানগামী শিক্ষার্থীসহ পর্যটকদের পাশাপাশি বাংলাদেশে আসা মানুষজন কোনো ঝামেলা ছাড়াই পারাপার হচ্ছেন এই চেকপোস্ট দিয়ে। তবে সড়ক-মহাসড়কে চাহিদার তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা কম। এতে দুর্ভোগে পড়ছেন পঞ্চগড় জেলা শহরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা যাত্রীরা। এতে কমে গেছে যাতায়াতকারীর সংখ্যা।
Advertisement
বুধবার (২৪ জুলাই) সরেজমিন বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন এলাকায় দেখা গেছে, অলস সময় পার করছেন চেকপোস্টের কর্মকর্তা-কর্মকচারীরা। অটোচালকসহ কুলি-শ্রমিকরাও বসে আছেন কাজের অভাবে। যাত্রীদের ভিড় নেই। মাঝে মধ্যে দু-একজন যাত্রী এসে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে যাতায়াত করছেন।
ইমিগ্রেশন এলাকায় কথা হয় চিকিৎসার জন্য ভারতগামী যাত্রী আব্দুল ওয়াদুদ বাবুর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট একেবারেই ফাঁকা। এখানে কোনো সমস্যা নেই। তবে পঞ্চগড় জেলা শহর থেকে আসতে বেশ কষ্ট হয়েছে। গাড়ির সংখ্যা কম। অতিরিক্ত খরচ করে আসতে হয়েছে।’
ভারত থেকে আসা নীলফামারীর জলঢাকা এলাকার স্বপ্না রানী বলেন, ‘আমি কলকাতার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করি। পরীক্ষা শেষ হওয়ায় দেশে ফিরেছি। এখন বাড়ি যাওয়ার গাড়ি পাচ্ছি না। এখান থেকে পঞ্চগড় শহরে যেতে ৩০০ টাকার ভাড়া ১৩০০ টাকা চাচ্ছেন অটো চালকরা। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে গাড়িও পাচ্ছি না। তবে আসতে কোনো সমস্যা হয়নি।’
স্থানীয় অটোরিকশাচালক আমির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এই ইমিগ্রেশন দিয়ে আগে প্রতিদিন ৩০০-৪০০ মানুষ যাতায়াত করতেন। তারও আগে ৫০০-৬০০ মানুষের যাতায়াত ছিল। এখন যাত্রী নেই বললেই চলে। আমাদের ইনকাম কমে গেছে। যাত্রীর অভাবে আমাদের সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।’
Advertisement
বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অমৃত অধীকারী বলেন, আমাদের পোর্ট কোনো সময় বন্ধ ছিল না। তারপরও অনেকে খোঁজ নিচ্ছেন পোর্ট চালু আছে কিনা। আমি সবাইকে বলছি, সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে যেমন শিক্ষার্থী-পর্যটক আসছেন, একইভাবে বাংলাদেশ থেকেও পর্যটন, ব্যবসা এবং চিকিৎসার জন্য ভারত, নেপাল ও ভুটান যাচ্ছেন। প্রতিদিন ১৮০-২০০ জন এই চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াত করছেন।
সফিকুল আলম/এসআর/এএসএম