খুব ছোটবেলার এক জন্মদিনে একটা উপহার পেয়েছিলেন শিল্পী শাফিন আহমেদ। একটা লাল খেলনা গাড়ি। দিয়েছিলেন ছোট মামি। ব্যাটারিচালিত গাড়িটা অন করে ছেড়ে দিলে একাই চলত, সামনে বাধা পেলে থেমে নিজেই ঘুরে যেত অন্যদিকে। প্রতি বছর জন্মদিন এলে ওই গাড়িটার কথা মনে পড়ত তার।
Advertisement
চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিল শাফিন আহমেদের ৬৩তম জন্মদিন। সাংবাদিক রাসেল মাহমুদকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেদিন তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের মতো একটা লাল খেলনা গাড়ি পেয়েছিলাম। সম্ভবত ছোট মামির কাছ থেকে। সেটা আমাকে খুব আনন্দ দিয়েছিল। সারা দিন খেলেছিলাম ওটা নিয়ে। তখন এলিফ্যান্ট রোডের একটি বাসায় থাকতাম। মা অনেক বড় করে জন্মদিনের আয়োজন করেছিলেন। পরিবারের অনেকে এসেছিলেন সেদিন। অনেক আনন্দ হয়েছিল। কিছু গিফট পেয়েছিলাম। সেগুলোর মধ্যে লাল রঙের ওই গাড়িটার কথা প্রায়ই মনে পড়ে।’
আরও পড়ুন সংগীতশিল্পী শাফিন আহমেদ মারা গেছেন শাফিন আহমেদের প্রয়াণ, শোক জানিয়ে যা বললেন জেমসচলতি বছর ফেব্রুয়ারির একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় শাফিন আহমেদের আত্মজীবনীমূলক বই ‘পথিকার’। সেখানে নিজের জীবনের নানা বিষয় নিয়ে অকপট ছিলেন এই শিল্পী। বাসা বদলে যখন গুলশান গেলেন, তখনকার স্মৃতিচারণ করে শাফিন বলেন, ‘গুলশানে কিছু নতুন বন্ধু-বান্ধব হলো। তারা ওয়েস্টার্ন গান শোনে। তাদের মা-বাবারা দেশের বাইরে যেতেন, ফেরার সময় রেকর্ড নিয়ে আসতেন।’
সেসব শুনতে লাগলেন শাফিনও। তার ওপর সেসবের প্রভাব পড়তে শুরু করল। তিনি বলেন, ‘থার্টি থ্রি আরপিএম লঙ প্লে রেকর্ডগুলোর ওপর ব্যান্ডগুলোর ছবি থাকতো। সেসব দেখে মাথা নষ্ট অবস্থা হয়ে যেত। পিঙ্ক ফ্লয়েড, লেড জ্যাপলিন, বব ডিলান, বিটলস, রোলিং স্টোন, স্যানটানার গান শুনেছি অনেক। ওদের অ্যালবাম হাতে পেলে মনে হতো এক একটা সোনার টুকরো হাতে পেয়েছি। রেকর্ড বাজানো শুরু হলে বাজাতে বাজাতে সাদা করে ফেলতাম। বাজতো, শুনতাম, গাইতাম চিৎকার করে। লিরিকস লেখা থাকতো।’
Advertisement
গত ২০ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় ছিল কনসার্ট। সেখানে গান গাইতে গিয়েছিলেন শাফিন আহমেদ। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় বাতিল করা হয় শো। তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে নেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। দুদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর আজ (২৫ জুলাই) মারা যান শাফিন আহমেদ। রাতে তার মরদেহ দেশে আনতে যাচ্ছেন ভাই হামিন আহমেদ।
আরএমডি/জিকেএস