কারফিউ জারির পঞ্চম ও চতুর্থ দিনে বরিশালে জনজীবন অনেকটাই স্বাভাবিক। বিশেষ করে বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকায় মানুষ বাসা থেকে বের হয়েছেন। কিছু কিছু অফিস খুললেও সবাই বের হয়েছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে।
Advertisement
তবে বরিশালে বেড়েছে দ্রব্যমূল্য। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে সবজির। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অবরোধ ও কারফিউর কারণে পণ্যের আমদানি না থাকায় সবজির দাম বেড়েছে।
এছাড়া গত কয়েক দিন ধরে কোনো কাজ করতে না পারায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন দিনমজুর ও শ্রমিকরা। অনেককে বাধ্য হয়ে কারফিউর মধ্যে রিকশা ও অটোরিকশা নিয়ে নামতে দেখা গেছে।
এ অবস্থায় নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পুলিশ, বিজিবি এবং সেনাবাহিনীর সদস্যদের চেকপোস্ট বসিয়ে বিভিন্ন যানবাহন ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তল্লাশি চালাতে দেখা গেছে।
Advertisement
এর আগে মঙ্গলবার রাতে কথা হয় বঙ্গবন্ধু কলোনির অটোরিকশাচালক মো. রেজাউল হকের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, গাড়ির চাকা না ঘুরলে জীবন চলে না, সেখানে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঘরে বসা। এভাবে কতদিন ঘরে থাকা যায়। বাধ্য হয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরও গাড়ি নিয়ে বের হলাম।
একই কথা বলেন নগরীর কাউনিয়া হাউজিং এলাকার রিকশাচালক মো. আবুল বাশার। তিনি বলেন, স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে তার পাঁচজনের সংসার। অবরোধ ও কারফিউর কারণে প্রায় ৭-৮ দিন ধরে ঘরে বসা। পেটের তাগিদে গত দুদিন ধরে কারফিউর মধ্যেও রাস্তায় বের হতে হয়েছে।
বরিশালের একমাত্র পাইকারি কাঁচামালের বাজার বহুমুখী সিটি মার্কেটের দুলাল বাণিজ্যালয়ের মালিক আমিনুল ইসলাম শুভ জাগো নিউজকে বলেন, পণ্যের সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও ক্রেতা নেই, অবরোধ ও কারফিউর কারণে আমদানি বন্ধ থাকায় সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দাম আবার কমে যাবে।
শুভ বলেন, বুধবার সকালে পটল ২৫ টাকা, বরবটি ৪৫ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, রেখা ২৫ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, লাউ আকার ভেদে ৫০-৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৮০-২২০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, করোল্লা ৭০ টাকা পাইকারি বিক্রি হয়েছে।
Advertisement
বিপরীতে খুচরা বাজারে পটল ৪৫ টাকা, বরবটি ৬৫ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, রেখা ৪৫ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, লাউ ৬০-৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৩০০-৩৫০ টাকা, বেগুন ৮০-৮৫ টাকা, করলা ৮০-৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর বাংলাবাজারের সবজি বিক্রেতা জাহিদ হোসেন বলেন, পাইকারি বাজার থেকে পণ্য কিনে আনার পর কিছু লাভ না করলে চলবে কীভাবে। আড়ত থেকে পণ্য আনা থেকে শুরু করে বাজারে বসে বিক্রি করা পর্যন্ত কয়েক ধাপে ধাপে টাকা গুনতে হয়, এসব টাকা মালামাল বিক্রি করেই তো উঠাতে হবে।
বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই বরিশালের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শাওন খান/জেডএইচ/জিকেএস