দেশজুড়ে

এক ব্রিজ ভেঙে দুর্ভোগে তিন গ্রামের মানুষ

ভোলায় এক ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তিন গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ। সহজ যোগাযোগের মাধ্যম ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় কেউ পারাপার হচ্ছেন নৌকা দিয়ে, আবার কেউ সময়মতো নৌকা না পেয়ে পানিতে নেমে ভিজে পার হচ্ছেন। তবে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে শিশু শিক্ষার্থীরা। নৌকা না পেয়ে অনেকেই ঠিক সময়ে ক্লাসে পৌঁছাতে পারছে না।

Advertisement

সরেজমিনে জানা গেছে, প্রায় ২০ বছর আগে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাচড়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর, দরুন ও সাচড়া গ্রামের মানুষের যাতায়াতের জন্য দরুন খালের ওপর নির্মিত হয় একটি আয়রন ব্রিজ। এই ব্রিজ দিয়েই দীর্ঘদিন সহজভাবে যাতায়াত করতেন ওই তিন গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ। কিন্তু গত ১ জুলাই অতি জোয়ারের পানির চাপে মাটি সরে গিয়ে ব্রিজটি ভেঙে যায়। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তিন গ্রামের মানুষ।

দরুন গ্রামের ফিরোজা বেগম জানান, তিনি ব্রিজের ওপারে গোবিন্দপুরে তার একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে তার মেয়ে অসুস্থ। মেয়ে তাকে প্রতিদিনই যেতে বলেন, তাই তিনি বাধ্য হয়ে খালে নেমে ভিজে ওপারে মেয়েকে দেখতে যাচ্ছেন।

শিক্ষার্থী মাহি ও তাসনুর আক্তার জানায়, তারা স্কুলে যাওয়ার সময় নৌকা না পেয়ে ঠিকমতো ক্লাসে পৌঁছাতে পারে না। আবার কোনো দিন বাড়িতে ফিরে যেতে হয়। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার কারণে তাদের স্কুলে যাতায়াত করতে অনেক সমস্যা হচ্ছে।

Advertisement

গোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুল রাজ্জাক, রোকেয়া বেগম ও রোসনা বেগম বলেন, আমাদের গ্রামের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে রোগীদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে। আগে যেখানে ব্রিজ পার হয়ে পায়ে হেঁটেও মাত্র ১০ মিনিটে দরুন বাজার মূল সড়কে পৌঁছে ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে উপজেলা সদরে যাওয়া যেত, এখন সেখানে বিকল্প পথ দিয়ে প্রায় ১ ঘণ্টা হেঁটে দরুন বাজার মূল সড়ক হয়ে উপজেলা সদরে যেতে সময় লাগে প্রায় দেড় ঘণ্টা।

তারা জানান, নৌকা পেলে দুর্ভোগ কম হয় রোগী নিয়ে। আর নৌকা না পেলে অনেক বেশি দুর্ভোগ হয়। এই দুর্ভোগ সমাধানে দ্রুত ব্রিজটি মেরামত ও নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি করছি।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. মাইদুল ইসলাম খান জানান, ২০০৪-০৫ অর্থ বছরে আয়রন ব্রিজ প্রকল্পের মাধ্যমে সাচড়া ইউনিয়নের গৌবিন্দপুর, সাচড়া ও দরুন গ্রামের মানুষের সহজ যাতায়াতের জন্য দরুন খালের ওপর প্রায় ৮০ ফিট লম্বা ও প্রায় ১২ ফিট চওড়া এই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। অতি জোয়ারের পানির চাপে মাটি সরে গিয়ে ব্রিজটি ভেঙে পড়ে গেছে। আপাতত ভেঙে যাওয়া ব্রিজটি সরিয়ে উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে একটি কাঠের ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও নতুন করে ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হবে।

এফএ/জেআইএম

Advertisement