ভালো মন্দ মিলিয়েই মানুষের জীবন। জীবনে যেমন সুসময় আসে, মাঝে মাঝে দুঃসময়ও আসে। অনেক সময় কঠিন বিপদ-আপদে পড়ে আমরা অসহায় বোধ করি। এ রকম সময়ে বিশ্বাসী মুমিন হিসেবে আমাদের আল্লাহর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করা উচিত। আল্লাহ তাআলা বলেন,
Advertisement
وَ اِذَا سَاَلَكَ عِبَادِیۡ عَنِّیۡ فَاِنِّیۡ قَرِیۡبٌ اُجِیۡبُ دَعۡوَۃَ الدَّاعِ اِذَا دَعَانِ فَلۡیَسۡتَجِیۡبُوۡا لِیۡ وَ لۡیُؤۡمِنُوۡا بِیۡ لَعَلَّهُمۡ یَرۡشُدُوۡنَ
যখন আমার বান্দারা আমার সম্পর্কে তোমাকে জিজ্ঞেস করে, আমি তো তাদের নিকটেই, কেউ আমাকে ডাকলে আমি তার ডাকে সাড়া দেই; তাই তাদের উচিত আমার নির্দেশ মান্য করা এবং আমার প্রতি ঈমান আনা, যাতে তারা সরলপথ প্রাপ্ত হয়। (সুরা বাকারা: ১৮৬)
তাই যে কোনো বিপদে পড়লে আমাদের কর্তব্য আল্লাহকে নিজের কাছে অনুভব করা এবং আন্তরিক বিশ্বাসের সাথে তার সাহায্য প্রার্থনা করা। এখানে আমরা হাদিসে বর্ণিত ৪টি দোয়া উল্লেখ করছি যেগুলো আমরা বিপদের সময় পড়তে পারি:
Advertisement
১. রাসুল (সা.) দোয়া করতেন,
اللَّهمَّ لا سَهْلَ إلَّا ما جعَلْتَه سَهلًا وأنتَ تجعَلُ الحَزْنَ سَهلًا إذا شِئْتَ
উচ্চারণ: আল্লাহহুম্মা লা সাহলা ইল্লা মা জাআলতাহু সাহলা ওয়া আনতা তাজআলুল হাজানা সাহলা।অর্থ: হে আল্লাহ আপনি যা সহজ করেন, তা ছাড়া কিছুই সহজ নয়। আপনি চাইলে কঠিন বিপদকেও সহজ করতে পারেন। (সহিহ ইবনে হিব্বান)
যে কোনো বিপদে রাসুলের (সা.) শেখানো এই দোয়াটি আমরা করতে পারি।
Advertisement
২. রাসুল (সা.) বলেছেন, ওই ব্যক্তির দুনিয়ার সব ব্যাপারে আল্লাহই যথেষ্ট হবেন, যে সকালে ও সন্ধ্যায় সাত বার এই দোয়াটি পড়বে,
حَسۡبِیَ اللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ عَلَیۡهِ تَوَکَّلۡتُ وَ هُوَ رَبُّ الۡعَرۡشِ الۡعَظِیۡمِ
উচ্চারণ: হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়া আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রাব্বুল আরশিল আজীম।অর্থ: আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। আমি তাঁরই ওপর ভরসা করেছি আর তিনিই আরশের রব। (মুনজিরি, তারগিব ওয়াত-তারহিব)
এই দোয়াটি কোরআনের সুরা তাওবার ৪৫ নং আয়াতেও বর্ণিত হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় এ দোয়াটি আমরা পড়তে পারি।
৩. রাসুল (সা.) দোয়া করতেন,
يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيثُ، وأَصْلِحْ لي شَأْنِي كُلَّهُ وَلَا تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ أبدا
উচ্চারণ: ইয়া হাইয়ু ইয়া কাইয়ুমু বিরাহমাতিকা আসতাগীসু ওয়া আসলিহ লী শা’নী কুল্লাহু ওয়া তাকিলনী ইলা নাফসী তারফাতা আইনিন আবাদান।
অর্থ: হে চিরস্থায়ী, সব কিছুর ধারক ও রক্ষাকর্তা! আমি আপনার করুণার মাধ্যমে সাহায্য চাই; আমার সব সমস্যা মিটিয়ে দিন এবং এক পলকের জন্যও আমার ভার আমার নিজের ওপর দেবেন না। (নাসাঈ ফিস-সুনান আল কুবরা)
এ দোয়াটি রাসুল (সা.) তার মেয়ে ফাতেমাকে (রা.) শিখিয়েছিলেন এবং সকালে ও সন্ধ্যায় পড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
৪. রসূল (সা.) আরও দোয়া করতেন,
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ، وَضَلَعِ الدَّيْنِ، وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি ওয়াল আজযি ওয়াল কাসালি ওয়াল জুবনি ওয়াল বুখলি ওয়া যালাইদ-দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।
হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই- দুশ্চিন্তা, পেরেশানি, অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা, ঋণভার ও মানুষের প্রভাবাধীন হওয়া থেকে। (সহিহ বুখারি: ৩৪৮৫)
আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ ৪টি দোয়া আমাদের যে কোনো কঠিন বিপদ-আপদের সহায় হতে পারে।
ওএফএফ/জিকেএস