অর্থনীতি

থমথম অবস্থা মতিঝিলে, ব্যাংক লেনদেনে ভাটা

কোটা সংস্কারের দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউনকে কেন্দ্র করে ব্যাংকপাড়া খ্যাত মতিঝিলে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। স্বাভাবিক দিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে জনসাধারণের চলাচল। বুলেটের (সাউন্ড গ্রেনেড) শব্দে শঙ্কিত গ্রাহক, ব্যাংক লেনদেনেও ভাটা পড়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, পল্টন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র গেছে।

Advertisement

এর আগে দুপুর ১২টায় মিছিলসহ বিক্ষোভ শুরু করে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থীরা। শাপলাচত্বর হয়ে নটর ডেম কলেজের দিকে মিছিলটি যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। শিক্ষার্থীরা আশপাশের গলিতে অবস্থান নেন। শুরু হয় ইটপাটকেল আর মুহুর্মুহু টিয়ারগ্যাস-রাবার বুলেট নিক্ষেপ।

এর পরপরই পুরো মতিঝিল এলাকায় থমথমে অবস্থা তৈরি হয়। গুলির শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে। রিকশা ছাড়া সব যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অনেকেই চায়ের দোকানও বন্ধ করে দেন।

কথা হয় চা দোকানি নুর ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পরপরই সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পথচারীরা নিরাপদ স্থানে চলে যান, কেউ কেউ অফিসে আশ্রয় নেন। চায়ের দোকানে ক্রেতা না থাকায় অনেকেই বন্ধ করে দেন।

Advertisement

রিকশাই একমাত্র বাহন এখন মতিঝিলের। কোনো ধরনের বাস-মিনিবাস চলাচল করছে না। এ সু্যোগে ভাড়া বাড়িয়েছেন রিকশাওয়ালা। শামীম নামে এক রিকশাচালক জানান, আজ সকাল থেকে সমস্যায় আছি। ভয়ে ভয়ে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি কিছুটা বেশি ভাড়ার আশায়। এ কারণে আজ একটু বাড়তি ভাড়া চাচ্ছি।

লেনদেন কমেছে ব্যাংকের শাখায়

এদিন ব্যাংকগুলোর শাখা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ কাউন্টারই ফাঁকা। নেই কোনো গ্রাহক। দু-একটি কাউন্টারে দু-একজন গ্রাহকের উপস্থিতি দেখা গেছে, যা ছিল অন্যদিনের তুলনায় একেবারেই নগণ্য এমনটা জানান ব্যাংক কর্মকর্তারা। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল জোরদার। অধিকাংশ ব্যাংকের শাখার মেইন ফটকের গেট আটকে রাখা হয়। সেখানে দায়িত্ব পালন করেন আনসার সদস্যরা। পরিচয় নিশ্চিত হয়েই ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেন তারা।

সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিসের ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম বলেন, ছাত্র আন্দোলনের কারণে অন্য দিনের তুলনায় আজ ব্যাংকের শাখায় গ্রাহকের উপস্থিতি কম। এ কারণের অন্যদিনের তুলনায় লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। তবে গ্রাহক-ব্যাংকের নিরাপত্তায় অফিসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

বুধবার সারাদেশে কমপ্লিট শাটডাউন (সর্বাত্মক অবরোধ) কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) এ কর্মসূচি চলাকালে শুধু হাসপাতাল ও জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেছেন আন্দোলনকারীরা৷

Advertisement

ইএআর/জেএইচ/জিকেএস