মাদারীপুরে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী, পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে গুলিবিদ্ধসহ উভয়পক্ষের আহত হয়েছে কমপক্ষে ৩০ জন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৬ জনকে আটক করেছে। এছাড়াও একজন মাদারীপুর শকুনি লেকে পড়ে নিখোঁজ আছেন বলে জানা যায়।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকালে কোটা বাতিলের দাবিতে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে মাদারীপুর শহরের ডিসিব্রিজ এলাকায় আন্দোলনকারীরা জড়ো হলে এই সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর শহরের ডিসিব্রিজ এলাকায় কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাধা দেন। পরে আন্দোলনকারীরা মাদারীপুর শহরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের প্রথমে ধাওয়া ও পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এক পর্যায়ে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধিসহ উভয়পক্ষের ৩০ জন আহত হন। পরে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে পুলিশ। পরবর্তীতে ছত্রভঙ্গ হয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। এসময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৬ জনকে আটক করে। আহতরা মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
Advertisement
এদিকে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে শহরের শকুনী লেকের পানিতে ডুবে এক শিক্ষার্থী নিখোঁজ আছেন। নিখোঁজের ঘটনায় উদ্ধার অভিযান শুরু করেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
আন্দোলনকারী আল-আমিন, সুমন, রিপন হোসেনসহ একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা প্রথমে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিলাম। এসময় প্রথমে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ও পরে পুলিশ আমাদের ওপর হামলা করে এবং গুলি করে। এই ঘটনায় আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। শুনেছি এক শিক্ষার্থী লেকের পানিতে পড়ে নিখোঁজ আছেন। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজ করছেন।
এ ব্যাপারে জানতে মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে একাধিকবার ফোন দিলেও তারা ফোন রিজিভ করেননি।
মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর শেখ আহাদুজ্জামান বলেন, আমাদের কাছে বেশ কিছু ফোন আসে লেকের পানিতে এক শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছেন। এই খবর পেয়ে আমাদের ৪ জন কর্মী লেকের পানিতে নেমে উদ্ধারের কাজ করছেন। তবে নিখোঁজ শিক্ষার্থীকে না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। নিখোঁজ শিক্ষার্থীর কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। খোঁজ চলছে, পরে বিস্তারিত বলা যাবে।
Advertisement
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলাউল হাসান জানান, পরিস্থিতি মোকাবিলায় শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে আন্দোলনকারীরা। এ সময় বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এফএ/এএসএম