নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে লাঠিসোঁটা ও বিস্ফোরকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমিনুল হক, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুকসহ ৩২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় এজাহারনামীয় ২৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। আর বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের অজ্ঞাতনামা ২০০-৩০০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
Advertisement
বুধবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর পল্টন থানায় এ মামলা করেন ডিবি পুলিশের মতিঝিল বিভাগের এসআই ফরমান আলী।মামলায় ১৮৭৮ সালের আর্মস অ্যাক্ট ও ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানাবলি আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে।
এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমিনুল হক, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক ও ডা. ফরহাদ হালিম, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান সারোয়ার ও খাইরুল কবির খোকন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেন, সাবেক যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দীন আহমেদ অসীম, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম নয়ন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নজরুল ইসলাম ও তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. ইমাম হোসেন।
এদিকে এ মামলায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণসহ (৩৮) বিএনপির সাত নেতাকর্মীর দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে যাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নজরুল ইসলাম (৪৭), তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন (৩০), বিএনপি কর্মী শাহাদাত হোসেন (৩২), মো. টেনু (৩৮), মনির হোসেন (২৫) ও বরকত হাওলাদার (৩৭)।
Advertisement
আরও পড়ুন
ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শ্রাবণসহ ৭ জন রিমান্ডে ডিবি আমাকে বাসা থেকে ধরে এনেছে, আমি কিছুই জানতাম না: শ্রাবণ বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে অভিযানে ককটেল-অস্ত্র উদ্ধার, আটক ৭এদিন আসামিদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেককে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক কবির হোসেন হাওলাদার। অন্যদিকে রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শান্ত ইসলাম মল্লিক আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে দুদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
মঙ্গলবার রাতে নয়াপল্টন কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষে লাঠিসোঁটা, বিস্ফোরকদ্রব্য ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের তথ্য জানান ডিবিপ্রধান। এরপর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শ্রাবণসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে ডিবি। পরে তাদের এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, ঢাকা মহানগর এলাকায় নাশকতা ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটিয়ে সরকারকে বিপাকে ফেলাসহ দেশকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে বিএনপির নেতৃবৃন্দ ও কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে ককটেল ও আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় ৫৫টি ককটেল, দুটি পাইপগান, পুরাতন তিনটি ওয়ান সুটারগান, একটি পিস্তল ও ২১০টি বাঁশের লাঠি উদ্ধার করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
Advertisement
জেএ/বিএ/এএসএম