অনুপম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই বাংলাদেশে বেড়ানোর স্থানের অভাব নেই। এখন ভ্রমণপিপাসুরা ছুটি পেলেই বেরিয়ে পড়েন ট্রাভেল ব্যাগ নিয়ে।
Advertisement
বেশিরভাগ মানুষই কক্সবাজার ও কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা ও শ্রীমঙ্গলসহ সিলেট বিভাগের দর্শনীয় স্থানগুলোতে ঘুরতে যান।
তবে যারা একদিনেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে চান তাদের জন্য কুমিল্লা হতে পারে সেরা গন্তব্য। রাতে রওনা দিয়ে সকালে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে সারাদিন দর্শনীয় স্থান ঘুরে আবারও রাতের গাড়িতে ফিতে পারেন বাড়ির উদ্দেশ্যে।
কুমিল্লা ভ্রমণে কোন কোন স্থানে ঘুরবেন? শালবন বিহারকুমিল্লা জেলা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঐতিহাসিক স্থানগুলোর জন্য সুপরিচিত। জেলার উত্তর পাশের পাহাড়ি অংশ ময়নামতি ও দক্ষিণ পাশ লালমাই নামে পরিচিত।
Advertisement
লালমাই ও ময়নামতির মধ্যবর্তী শালবন বিহার একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। শালবন বিহার ও তার আশপাশে আছে প্রাচীন সভ্যতার বেশ কিছু নিদর্শন।
শালবন বিহার থেকে মাত্র ৫/৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কুমিল্লা সেনানিবাসের অভ্যন্তরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈন্যদের সমাধিস্থল কুমিল্লার একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
ময়নামতি জাদুঘরময়নামতি জাদুঘর হলো কুমিল্লার আরেকটি বিশেষ আকর্ষণ। এই জাদুঘরে আপনি দেখতে পাবেন প্রাচীন আমলের অস্ত্রশস্ত্র, ব্রোঞ্জের পাত্র, স্বর্ণমুদ্রা, রৌপ্যমুদ্রা ও ব্রোঞ্জের তৈরি ৮৬ প্রকার দ্রব্যাদি। শুধু তাই নয়, এখানে আরও দেখবেন বিভিন্ন বৌদ্ধমন্দির থেকে সংগৃহীত ১৫০ এরও বেশি বৌদ্ধমূর্তি।
আরও পড়ুন অ্যাডভেঞ্চারে ঠাসা নাপিত্তাছড়া ট্রেইল নিকলী হাওরে পর্যটকদের ঢল বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমিকুমিল্লা শহরের ৪/৫ কিলোমিটার বাইরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাছাকাছি কোটবাড়িতে অবস্থিত বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির সৌন্দর্যও মুগ্ধ করার মতো।
Advertisement
কুমিল্লার আরেকটি দর্শনীয় স্থান হলো ধর্মসাগর দীঘি। ধারণা করা হয়, ১৭৫০ কিংবা ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে প্রজাহিতৈষী রাজা ধর্মপালের নামে রাখা হয়েছে এই দীঘিটির নাম।
রাজা ধর্মপাল ছিলেন পাল বংশের রাজা ও প্রজাদরদী মানুষ। দুর্ভিক্ষের সময় দুর্ভিক্ষপীড়িত লোকজনকে পানি দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য এই দীঘিটি খনন করা হয়।
রাজার উদ্দেশ্য ছিল প্রজাদের পানির কষ্ট দূর করা। প্রতিদিন বিকেলে এই দীঘির পাড়ে ভিড় জমান অনেক দর্শনার্থী।
যাতায়াত ও থাকাদেশের যে কোনো স্থান থেকে চট্টগ্রামগামী ট্রেনে উঠে আপনি সহজেই কুমিল্লায় নেমে যেতে পারেন। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ আরও কয়েকটি জেলা থেকে বাস সার্ভিস আছে।
ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে এশিয়া লাইন, তিশা, বিআরটিসি, ইকোনো সার্ভিস, রয়েল কোচ প্রভৃতি আরামদায়ক বাস আড়াই ঘণ্টার মধ্যে কুমিল্লায় পৌঁছে।
রাতে থাকার জন্য শহরে আছে হোটেল রেড প্রুফ ইন, কানন লেইক রিসোর্ট লিমিটেড, হোটেল বিলাস, হোটেল সাগরিকা, হোটেল পিপাসা, হোটেল গোমতী প্রভৃতি মাঝারি বাজেটের হোটেল।
একটু নিরিবিলি ও আরামদায়ক বসবাসের জন্য আছে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) এর গেস্ট হাউস যা ‘রাণীর কুঠি’ নামেও পরিচিত।
কুমিল্লায় ঘুরতে গিয়ে সেখানকার দেশসেরা রসমালাইয়ের স্বাদ পরখ করতে ভুলবেন না। এর পাশাপাশি সেখানকার খাদি কাপড়ের পরিচিতিও ব্যাপক।
জেএমএস/জিকেএস