কক্সবাজারে সহিংসতায় রূপ নিয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলন। আন্দোলন সমর্থনকারীরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে জেলা আওয়ামী লীগ ও জাসদ কার্যালয়। এ সময় জাসদ কার্যালয়ের সড়ক সাইডের জানালার প্রায় সব গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়েছে।
Advertisement
এছাড়া সামনে পেয়ে তারা কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাজিবুল ইসলাম মোস্তাককে কুপিয়েছেন। এ সময় মাথা রক্ষা করতে গিয়ে হাত তোলায় তার ডান হাতে মারাত্মক জখম হয়েছে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাজীবকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে কক্সবাজার লালদীঘি পাড়ের জেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা জাসদ কার্যালয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
জখম হওয়া রাজিব কক্সবাজার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নজির আহম্মদের ছেলে ও কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক।
Advertisement
জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মুহাম্মদ আশিকুর রহমান বলেন, সন্ধ্যায় হাতে মারাত্মক জখম পাওয়া এক যুবককে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার অবস্থা আশংকাজনক। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহত রাজিব বলেন, বিকেল থেকে আমরা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অবস্থান করছিলাম। সাড়ে পাঁচটার দিকে হঠাৎ সশস্ত্র একদল যুবক আমাদের ওপর হামলা করে। তাদের হামলায় আমি গুরুতর জখম হলে অন্যরা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা শুরু থেকে বলছি এ আন্দোলন শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নয়, জামায়াত-বিএনপির আন্দোলন। তারা দেশের অগ্রযাত্রা রুদ্ধ করতে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। এরই অংশ হিসেবে কক্সবাজারে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলার দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে।
কক্সবাজার পৌরসভা শাখা জাসদের সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন মাসু বলেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে শিবির ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে আমাদের অফিস ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনায় আমরা থানায় অভিযোগ দেবো।
Advertisement
এর আগে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের অবস্থানের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। কক্সবাজার শহরের ৬নং রোডের মাথায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। কোটাবিরোধীরা কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কে মিছিল শেষে সড়কের ওপর অবস্থান নিলে জেলা পুলিশ তাদের রাস্তা থেকে সরে যেতে অনুরোধ জানায়।
এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। এর কিছুক্ষণ পর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মঈন উদ্দিনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একদল কর্মী উক্ত স্থানে উপস্থিত হলে তাদের লক্ষ্য করে একই স্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হন। ছাত্রলীগের হামলায় টিকতে না পেরে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে তারা একত্রিত হয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয়।
এ সময় সৈকত উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন বলে দাবি করা হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিজানুর রহমান বলেন, বিশৃঙ্খলার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি।
সায়ীদ আলমগীর/এফএ/জেআইএম