শিক্ষা

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার সময়সীমা নিয়ে যা জানা গেলো

নির্বাহী আদেশে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সরকারের এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তদারককারী সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। সেখানে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ারও নির্দেশনা দিয়েছে।

Advertisement

তবে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কখন হল ছাড়বেন, সে বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে কিছু বলা হয়নি। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইউজিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারাও স্পষ্ট করতে পারেননি।

জানতে চাইলে ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান রাতে জাগো নিউজকে বলেন, ‌‘শিক্ষার্থীদের নিরাপদে হল ছাড়ার সময় স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক করে দেবে। এটা নিয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে আলাদা আলাদা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এটা জানিয়ে দেবে। শিক্ষার্থীদের সেটা অনুসরণ করতে হবে।’আরও পড়ুন

এবার সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছে জাগো নিউজ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. প্রণব কুমার পাণ্ডে জাগো নিউজকে বলেন, ‘ইউজিসির নির্দেশনার পর রাবি প্রশাসন জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করেছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তার আগে শিক্ষার্থীরা হলেই থাকবেন। কেউ বের হবেন না।’

Advertisement

একই কথা জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘ইউজিসির নির্দেশনার বিজ্ঞপ্তি আমরা পেয়েছি। তবে রাতে তো শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বলার সুযোগ নেই। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা নিরাপদে থাকুক। প্রশাসন এটা নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। বিষয়টি দ্রুত শিক্ষার্থীদের হলে হলে নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিন্ডিকেট সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট অনুযায়ী এভাবে ইউজিসি নির্দেশনা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করতে পারে না। সরকারের যদি এটা নির্দেশনা হয়, তবুও আমাদের সিন্ডিকেট সভা করতে হবে। হয়তো রাতেই সিন্ডিকেট সভা হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত হবে।’

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের রাতে হল ছাড়ার বা হল থেকে বের হওয়ার সুযোগ নেই। দিনের বেলায় নিরাপত্তার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের সময় দেওয়া হতে পারে। সেটা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেওয়া হবে।

হল পাহারায় প্রাধ্যক্ষ-আবাসিক শিক্ষকরাদিনভর সংঘর্ষের পর ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে রাতে অবস্থান করছেন প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকরা। পাশাপাশি হলের ফটকগুলোতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জাগো নিউজের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদকরা স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের এ পরিস্থিতির তথ্য জানিয়েছেন।

Advertisement

জাগো নিউজের জাবি প্রতিনিধি জানান, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে নেই। শিক্ষার্থীরা সবাই হলে হলে অবস্থান করছেন। বাইরে পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। তারা কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন। আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি থমথমে।

আমাদের রাবি প্রতিনিধি জানান, সব হলে রাতে প্রাধ্যক্ষরা অবস্থান করছেন। পুলিশ কঠোর প্রহরায় রয়েছেন। শিক্ষার্থীরা সবাই হলে নিজ নিজ কক্ষে। বাইরে কেউ নেই। ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি সুনসান।

মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা অবরোধ কর্মসূচি করেছেন। রাজধানীতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এদিন রাস্তায় নামে কলেজপর্যায়ের শিক্ষার্থীরাও। এতে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৬ জন মারা গেছেন।

এএএইচ/এমএএইচ/