আন্তর্জাতিক

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বক্তব্য কি বিভ্রান্তিকর?

কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান বিক্ষোভে সোমবার (১৫ জুলাই) পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সংবাদে না এলেও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে দুজন নিহতের কথা বলা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সামাজিক যোগাযোগ যোগাযোগমাধ্যমের গুজবে বিভ্রান্ত হয়েছে কি না- এমন প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

সোমবার ওয়াশিংটনে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ঢাকা ও বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে দুজন নিহত ও শত শত শিক্ষার্থী আহত হওয়ার বিষয়টি আমাদের জানা আছে ও আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।

আরও পড়ুন: 

কোটা সংস্কার ইস্যুতে নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব গণমাধ্যমে বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলন সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা কেমন ভারতে?

তিনি আরও বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ যেকোনো সমৃদ্ধ গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য অংশ। আমরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে যেকোনো সহিংসতার নিন্দা জানাই। যারা এই সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।

Advertisement

এদিকে, ম্যাথিউ মিলারের দেওয়া তথ্য ভিত্তিহীন উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন।

আরও পড়ুন: 

কোটিপতির মেয়ে হয়েও গরিব কোটায় সরকারি চাকরি! ‘অশান্তির চাকরি’ ছেড়ে বসের সামনে নাচতে নাচতে বেরিয়ে গেলেন যুবক বিদেশে ক্যারিয়ার গড়তে সেরা দেশ সৌদি, তৃতীয় যুক্তরাষ্ট্র

তিনি বলেন, ওয়াশিংটন সময় গতকাল ১৫ জুলাই একটি নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের একটি প্রশ্নের জবাবে আমরা অত্যন্ত হতাশ হয়েছি। সেখানে তিনি চলমান ছাত্র বিক্ষোভ থেকে কমপক্ষে দুইজনের মৃত্যুর দাবি করেছেন, যেটি ভিত্তিহীন।

সেহেলী বলেন, এই ধরনের ভিত্তিহীন দাবি করার জন্য যাচাইহীন তথ্যের ব্যবহার সহিংসতাকে উস্কে দিতে পারে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ আমাদের গণতন্ত্রের ভিত্তি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকার জনগণের জানমালের সঙ্গে সঙ্গে দেশের শৃঙ্খলা রক্ষা করার পাশাপাশি নাগরিকদের অধিকার সমুন্নত রাখতে অবিচল।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র ও রাজনীতিতে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। আমরা সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ায় একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের জীবননাশের একটি ভয়াবহ প্রচেষ্টা প্রত্যক্ষ করেছি। এ ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

‘এ ধরনের সহিংসতা গণতন্ত্রের মূল মূল্যবোধের বিরুদ্ধে।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী পৃথকভাবে হামলার নিন্দা করেছেন, ট্রাম্প নিরাপদে আছেন এবং সুস্থ হয়ে উঠছেন জেনে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

এ বিষয়ে মঙ্গলবার ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা লিওনার্দ হিল জাগো নিউজকে বলেছেন, বাংলাদেশে যা কিছু ঘটছে, সে সম্পর্কিত প্রতিবেদনগুলো আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। মুখপাত্র (ম্যাথিউ মিলার) যেমন বলেছেন, বাকস্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ যেকোনো বিকাশমান গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য, আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে যেকোনো সহিংসতার নিন্দা জানাই। যারা এই সহিংসতার শিকার হয়েছেন, তাদের জন্য আমাদের ভাবনা রয়েছে।

এসএএইচ/কেএএ