আন্তর্জাতিক

বিশ্ব গণমাধ্যমে বাংলাদেশের কোটাবিরোধী আন্দোলন

বাংলাদেশে চলছে কোটাবিরোধী আন্দোলন। এতদিন এই আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চললেও সোমবার (১৫ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীর নগর, চট্টগ্রামসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ হওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠেছে। আর তারপর থেকেই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে উঠে আসতে শুরু করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে।

Advertisement

আসুন এক নজরে দেখা যাক এখন পর্যন্ত কোন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে কী কী বলেছে-

এএফপি

প্রভাবশালী ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি বেশ কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশের কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে সংবাদ ও ফটোপোস্ট প্রকাশ করে আসছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) একটি ফটো পোস্টের ক্যাপশনে বার্তাসংস্থাটি লেখে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলের সমর্থনকারী ছাত্রদের সংঘর্ষের পর আহত এক শিক্ষার্থীকে নিয়ে যাচ্ছেন বাকিরা। সোমবার উভয় পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০০ জন আহত হয়।

Advertisement

আনাদোলু এজেন্সি

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা নিয়ে প্রতিবেদন করেছে তুর্কি বার্তাসংস্থা আনাদোলু। তারা বলে, সোমবার বাংলাদেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে শত শত মানুষ আহত হয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিবাদে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে জড়ো হলে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে সংঘর্ষে আহত ২৫০ জন শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১১ জনকে ভর্তি রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির জরুরি ইউনিটের কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান।

এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেটসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার পর কোটাবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।

Advertisement

আল জাজিরা

সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনার পরপরই ‘সরকারি চাকরিতে কোটার প্রতিবাদে অন্তত ১০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আহত’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগপন্থি ছাত্রসংগঠন ও সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০০ জন আহত হয়েছেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কয়েকশ কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষার্থী ঘণ্টার পর ঘণ্টা সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া লিপ্ত হয়েছে। তারা ঢিল ছোড়া, লাঠিসোঁটা ও লোহার রড দিয়ে একে-অন্যকে মারধর করেছে।

রয়টার্স

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী ও ক্ষমতাসীন দলের অনুগতদের মধ্যে সংঘর্ষে সোমবার সারা বাংলাদেশে ১০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

গত জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর এবারই প্রথমবারের মতো বড় ধরনের বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঢাকাসহ সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী এবং আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। এ সময় তারা একে অন্যের ওপর ঢিল ছোড়া, লাঠিসোঁটা ও লোহার রড নিয়ে চড়াও হয়েছে।

বেশ কয়েকটি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারপরও দাবি আদায়ে সারাদেশে মিছিল ও বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।

বিবিসি

চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে পাঁচদিন আগে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশের হাজার হাজার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, বর্তমান কোটা ব্যবস্থা বৈষম্যমূলক ও তা সংস্কার করতে হবে।

এসএএইচ