কলকাতায় খুন হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মামলার অন্যতম সন্দেহভাজন আসামি সিয়াম হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ফরেনারস অ্যাক্টে মামলা করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। এ মামলায় সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
Advertisement
সোমবার (১৫ জুলাই) সিয়ামকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমা আদালতে হাজির করে সিআইডি। এরপর সিয়াম কীভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করলো, তাকে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশে কারা সহায়তা করলো, তার সঙ্গে আর কেউ অনুপ্রবেশ করেছেন কি না- এসব প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধানে সিয়ামের রিমান্ড আবেদন জানায় সিআইডি।
সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বনগাঁর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাকে চারদিনের হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন
Advertisement
সিআইডির ধারণা, অভিযুক্ত সিয়াম ভারত-বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত বনগাঁ পেট্রোল স্থলবন্দর দিয়ে অবৈধভাবে ভারতের প্রবেশ করেন এবং রাজারহাট নিউটনের সঞ্জীবা গার্ডেনসে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেন।
সিয়াম বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ফরেনারস অ্যাক্টে একটি মামলা দায়ের করেছে সিআইডি।
বনগাঁ মহকুমা আদালতের সরকারি আইনজীবী সমীর দাস জানিয়েছেন, বাংলাদেশের এমপি আনার হত্যা মামলায় এরই মধ্যে অভিযুক্ত হয়েছেন সিয়াম হোসেন। তাকে আজ সোন অ্যারেস্টে বনগাঁ আদালতে হাজির করা হয়। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ১৪ ফরেনারস অ্যাক্টে মামলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সিআইডি আজ আদালতের কাছে আবেদন করেছিল সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে তাকে চারদিনের সিআইডি হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
Advertisement
অভিযুক্তে সিয়াম হোসেনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশে অপহরণ), ৩০২ (অপরাধমূলক নরহত্যা), ২০১ (তথ্য-প্রমাণ লোপাট) এবং ৩৪ (সংঘবদ্ধভাবে অপরাধমূলক কাজ সংঘটিত করা) জামিন অযোগ্য এই চারটি ধারায় মামলা করা হয়েছে। এবার সিআইডির পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ১৪ ফরেনারস অ্যাক্ট যুক্ত করা হলো।
আরও পড়ুন
সিয়ামই কসাই জিহাদ এমপি আনোয়ারুলের সন্দেহভাজন ৪ খুনির আখ্যানএমপি আনার হত্যার ঘটনা সামনে আসার পর গত ২৩ মে জিহাদ হাওলাদারকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ থেকে গ্ৰফতার করে সিআইডি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদেরই বেরিয়ে আসে সিয়ামের নাম।
গত ১৩ মে সঞ্জীবা গার্ডেনসে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ধারণা করা হচ্ছে, এমপিকে খুন ও মরদেহ গুম করার কাজে যুক্ত ছিলেন সিয়াম। নিউটাউনের অভিজাত ওই সঞ্জীবা গার্ডেনসের যে সিসিটিভি ফুটেজ সামনে আসে তাতেও সিয়ামকে দেখা যায়।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশের হাতে গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদ করেও সিয়ামের নাম সামনে আসে। এবার নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তে আরও গতি আনতে চায় সিআইডি কর্মকর্তারা।
এরই মধ্যে খণ্ড-বিখণ্ড মরদেহ এমপি আনারের কি না, তা জানতে এবার ডিএনএ স্যম্পেল দিতে চলতি সপ্তাহেই কলকাতায় আসতে পারেন আনারের কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।
ডিডি/এমকেআর