ক্যাম্পাস

মেরে রুমমেটের নাক ফাটালেন ছাত্রলীগ নেতা

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) রুমমেটের নাক ফাটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতা। রুমমেট গোলাম কিবরিয়া রিডিংরুম থেকে পাড়শোনা শেষ করে এসে রাত তিনটায় কক্ষের দরজা খোলার জন্য ধাক্কা দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে এই কাণ্ড ঘটান। রোববার (১৪ জুলাই) রাত তিনটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম রাসেল হোসেন রিয়াদ। তিনি পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাবেক উপ স্কুলছাত্র বিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। আর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম গোলাম কিবরিয়া। তিনি সমাজকর্ম বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক সহ-সভাপতি। তারা দু’জন বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৪০৭ নম্বর কক্ষে থাকেন।

Advertisement

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী গোলাম কিবরিয়া জানান, রাসেল হোসেন রিয়াদ এবং তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৪০৭ নম্বর কক্ষে থাকেন। তিনি হলের রিডিংরুমে সাধারণত গভীর রাত অবধি পড়াশোনা করেন। সোমবারও রাত তিনটায় হলের রিডিং রুম থেকে পড়াশোনা শেষ করে নিজ কক্ষে আসেন। এ সময় তিনি দেখেন কক্ষের দরজা বন্ধ। এরপর দরজা খোলার জন্য দরজায় কড়া নাড়েন। এক পর্যায়ে তার রুমমেট রাসেল হোসেন রিয়াদ কক্ষের দরজা খুলেই তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তখন রুমের সামনে থাকা জুতা তুলে নিয়ে তাকে এলোপাথাড়ি মারতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে কিবরিয়ার নাক-মুখ ফেটে রক্ত বের হলে তিনি দৌড়ে ৩০৪ নম্বর কক্ষে চলে আসেন। এ সময় রিয়াদ তার ফোনও ভেঙে ফেলেন বলে কিবরিয়া অভিযোগ করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী গোলাম কিবরিয়া বলেন, ওই ছাত্রনেতা প্রায় সময়ই আমার সঙ্গে ঝামেলা করতেন। কিছুদিন আগে তিনি আমাকে রুম ছেড়ে দিতে বলেছিলেন। এর আগে ৪০৭ নম্বর কক্ষে বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে দা নিয়ে তাড়িয়ে বের করে দিয়েছেন। আমি প্রশাসনের কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

৩০৪ নম্বর কক্ষের শিক্ষার্থীরা জানান, রাত সাড়ে তিনটার দিকে তাদের দরজায় ধাক্কাধাক্কির আওয়াজ শুনতে পান। তারা উঠে দেখেন কিবরিয়া রক্তাক্ত অবস্থায় কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তার নাক থেকে রক্ত পড়ছিল। পরে তাকে আমরা দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে কল করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করি।

Advertisement

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রাসেল হোসেন রিয়াদ বলেন, যে অভিযোগগুলো করা হচ্ছে তা পুরাপুরি সত্যি নয়। কিবরিয়া অধিক রাত পর্যন্ত কক্ষের বাইরে থাকে। আমি রাজনীতি করি, তাই আমার নিরাপত্তার একটা বিষয় আছে। আজ রাত তিনটার সময় রুমে এসে দরজা ধাক্কাতে শুরু করে, এতে আমি ভয় পেয়ে যাই। দরজা খুলে দেখি কিবরিয়া দাঁড়িয়ে আছে। সে তখন আমার সঙ্গে উচ্চবাচ্য করে। পরে আমাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়, সেও আমাকে আক্রমণ করেছে। আমার ঠোঁট ফেটে যায়, হাতে ব্যথা পাই। আমি দেখেছি ওর তেমন কিছুই হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, হাসপাতালে গিয়ে দেখে এসেছি। হাসপাতাল থেকে ওই ছাত্র ক্যাম্পাসে ফিরলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবো।

আমিন ইসলাম জুয়েল/এফএ/জিকেএস

Advertisement