আইন-আদালত

জাপানি মায়ের আদালত অবমাননার আদেশ ২২ জুলাই

আদালত অবমাননার অভিযোগে জাপানি নাগরিক ডা. এরিকো নাকানোর বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্য আগামী সোমবার (২২ জুলাই) দিন ঠিক করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

Advertisement

সোমবার (১৫ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে আজ এরিকোর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও আইনজীবী মুহাম্মাদ শিশির মনির। ইমরান শরীফের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আখতার ইমাম। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার রেশাদ ইমাম ও ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম।

আদালতের আদেশ অনুসারে হাজির থাকতে জাপান থেকে ফিরেছেন ডা. এরিকো নাকানো। তবে তিনি তার বড় মেয়েকে জাপানে রেখে এসেছেন। গণমাধ্যমকে এমন তথ্য জানিয়েছেন এরিকোর আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেন, বুধবার (১০ জুলাই) দুপুর ১টায় বাংলাদেশে এসেছেন এরিকো।

Advertisement

২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি নাগরিক ডা. এরিকো নাকানোকে বাংলাদেশি আমেরিকান নাগরিক ইমরান শরীফ জাপানি আইনানুসারে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। তাদের ১২ বছরের সংসারে তিনজন সন্তান জন্ম নেয়। এরপর বনিবনা না হওয়ায় দুই মেয়েকে নিয়ে দেশে চলে আসেন ইমরান শরীফ। পরবর্তী সময় ২০২১ সালে বাংলাদেশে এসে রিট করেন এরিকো। তখন সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি পারিবারিক আদালতে নিষ্পত্তি করতে বলেন।

ঈদের আগে বড় মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছেন জাপানি মা এরিকো

২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান শিশুদের জিম্মা চেয়ে বাবা ইমরান শরীফের মামলা খারিজ করে রায় দেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে পরদিন ইমরান শরীফ আপিল করেন জেলা জজ আদালতে। একই বছরের ১২ জুলাই জজ আদালতেও ইমরান শরীফের আবেদন খারিজ করে দেন। তারপর তিনি হাইকোর্টে রিভিশন করেন। চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি সেই রিভিশন আংশিক মঞ্জুর করে রায় দেন হাইকোর্ট।

আদেশে আদালত বলেন, বড় মেয়ে জেসমিন মালিকা শরীফের হেফাজত মায়ের পক্ষে নির্ধারণ করা হবে, তবে ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি বিবেচনা করে কন্যা লায়লা লিনা শরীফের হেফাজত প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত বাবার কাছে থাকবে।

রায়টি প্রকাশ করার পর দুই পক্ষই আপিল করেন। ইমরান শরীফ বড় মেয়েকে চেয়ে এবং এরিকো মেঝ মেয়েকে চেয়ে লিভ টু আপিল করেন। তবে ইমরানের আবেদনে একটি নিষেধাজ্ঞার আবেদন ছিল। যেখানে বলা হয়েছে, মেয়েকে যেন দেশের বাইরে না নেওয়া হয়। এরপর ৯ এপ্রিল আপিল বিভাগ স্থিতাবস্থার আদেশ দেন।

Advertisement

ইমরান শরীফের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমামের দাবি, সন্তানদের দেশের বাইরে যেতে আদালতের স্থিতাবস্থা ছিল। তা সত্ত্বেও বড় মেয়েকে নিয়ে এরিকো চলে গেছেন। এই কারণে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়।

তখন আইনজীবী মো. শিশির মনির জানান, ৯ এপ্রিল দুপুর ১টায় আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন। এই আদেশ হওয়ার আগেই বেলা ১১টার দিকে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে তারা দেশত্যাগ করেন।

শিশির মনির বলেন, হাইকোর্ট রায়ের কোথাও বলেননি যে, বাবা ও মা সন্তানদের নিয়ে দেশত্যাগ করতে পারবেন না। এরপর দুই পক্ষের লিভ টু আপিল এবং ইমরান শরীফের আদালত অবমাননার আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ৯ মে কার্যতালিকায় ওঠে। ওই দিন আপিল বিভাগ ১১ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।

এফএইচ/এসআইটি/জেআইএম