সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উক্তি ঘিরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে মিছিলে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
Advertisement
শিক্ষার্থীরা বলেন, অভিভাবক হয়ে প্রধানমন্ত্রীর আমাদের পাশে দাঁড়ানোর কথা, তা না করে তিনি আমাদের নিয়ে কটুক্তি করেছেন। এর প্রতিবাদে আমরা বিক্ষোভ মিছিল করেছি। মিছিল নিয়ে লাইব্রেরির সামনে আসলে ছাত্রলীগ আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের অনেকে আহত হয়েছেন।
সোমবার (১৪ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে ও মেয়েদের আবাসিক হলগুলোতে ‘আমি কে, তুমি কে, রাজাকার রাজাকার’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। মুহূর্তের মধ্যে ক্যাম্পাসে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। একদিকে শাহপরান হলের দিকে মিছিল নিয়ে আসেন শিক্ষার্থীরা, অন্যদিকে শাহপরান হল থেকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে দিতে ক্যাম্পাসের দিকে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
মিছিল দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে মুখোমুখি হয়। এসময় ছাত্রলীগ কর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন বলে অভিযোগ তোলেন আন্দোলনকারীরা। পরে পিছু হটে ছাত্রলীগ।
Advertisement
অর্জুনতলায় ছাত্রলীগ অবস্থান নিলে শিক্ষার্থীরা শাহপরান হল অভিমুখে মিছিল নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। পরে ছাত্রলীগ ‘জয় বাংলা’, ‘আমি কে তুমি কে, বাঙালি বাঙালি’ বলে স্লোগান দিতে দিতে গোলচত্বরে গিয়ে অবস্থান নেয়।
এদিকে শিক্ষার্থীরা শাহপরাণ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে কিছুক্ষণের জন্য অবস্থান করেন এবং ‘আমি কে তুমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘শাবিপ্রবির মাটি, রাজাকারের ঘাটি’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। পরে আবার গোল চত্বরে এসে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে আহতদের নিয়ে হাসপাতালে যান শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শাবিপ্রবির সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, আমাদের মিছিলে ছাত্রলীগ হামলা করেছে। এতে আমাদের অনেকে আহত হয়েছেন। অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
মিছিলে অংশ নেওয়া আরেক শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ বলেন, ছাত্রলীগের হামলায় আমাদের অন্তত ১০০ জনের মতো আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩ জন গুরুতর আহত। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। অবিলম্বে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
Advertisement
তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মো. খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ তাদের ওপর হামলা করেনি। তারা ছাত্রলীগের ওপর মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। দু’পক্ষের মিছিল মুখোমুখি অবস্থানে আসলে আমরা তাদেরকে একপাশ দিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছি।
ছাত্রলীগ সভাপতি আরও বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের কোনো ধরনের সংঘর্ষের ইচ্ছা নেই। একটা মহল প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে মেন্যুপুলেট করে রাজাকার শব্দকে সর্বজনীন করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়ে রাজপথে নামানোর চেষ্টা করছে। আমরা শিক্ষার্থীদের বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী কোটার বিষয়ে যৌক্তিক সমাধান দেবেন। আপনারা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের কোথাও বলেন নাই মুক্তিযোদ্ধা বাদ দিয়ে বাকি সবাই রাজাকারের সন্তান।
নাঈম আহমদ শুভ/এফএ/জেআইএম