যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো মুখোমুখি হচ্ছেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য ওই নির্বাচনে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্টের চেয়ে সাবেক প্রেসিডেন্টের জেতার সম্ভাবনা বেশি বলে আগে থেকেই ইঙ্গিত দিচ্ছিল বেশিরভাগ জরিপ। শনিবার (১৩ জুলাই) ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার ঘটনার পর দুই নেতার জনসমর্থনের পার্থক্য আরও বাড়বে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
Advertisement
এদিন পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের বাটলারে এক নির্বাচনী জনসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় হামলার শিকার হন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর একটু এদিক-ওদিক হলেই কান ছুঁয়ে বেরিয়ে যাওয়া বুলেটে প্রাণ যেতে পারতো এ রিপাবলিকান নেতার।
আরও পড়ুন>>
গুলিতে ডান কান ফুটো হয়ে গেছে, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন ট্রাম্প ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে: এফবিআই এক সপ্তাহ আগেই বাইডেন বলেছিলেন, ট্রাম্পকে নিশানা করার সময় এসেছেতবে ট্রাম্প বেঁচে গেলেও প্রাণ হারিয়েছেন তার একজন সমর্থক, আহত হয়েছেন আরও দুজন। ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টা করা হামলাকারী সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টদের গুলিতে নিহত হয়েছেন।
Advertisement
১৯৮১ সালে রোনাল্ড রিগ্যানকে গুলির পর থেকে এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বা বর্তমান কোনো প্রেসিডেন্টের জীবন বাস্তবিকভাবে হুমকির মুখে পড়লো।
ট্রাম্পের সঙ্গে রুজভেল্টের তুলনাএই ঘটনার পর অনেকেই ট্রাম্পের সঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্টের তুলনা করছেন। ১৯১২ সালে রুজভেল্টের ওপর যখন গুলি করা হয়, তখন তিনিও পুননির্বাচিত হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। মিলওয়াকিতে নির্বাচনী প্রচারণার সময় রুজভেল্টের বুকে গুলি করা হলেও প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
আশ্চর্যজনকভাবে, দু’দিন পরে রিপাবলিকান কনভেশনে অংশ নিতে সেই মিলওয়াকি শহরেই যাওয়ার কথা ট্রাম্পের। তার আগেই গুলিতে আহত হলেন তিনি।
রাইস ইউনিভার্সিটির ইতিহাসবিদ ডগলাস ব্রিঙ্কলির মতে, থিওডোর রুজভেল্ট যেখানে গুলি খেয়েছিলেন, সেই মিলওয়াকি শহরে গিয়ে ট্রাম্প সম্ভাবত সবচেয়ে বড় মঞ্চ পাবেন।
Advertisement
আরও পড়ুন>>
আগেও হামলার শিকার হয়েছেন যেসব মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওপর হামলাকারী সম্পর্কে যা জানা গেলো কেমন আছেন ট্রাম্প?এর সঙ্গে একমত সাবেক রিপাবলিকান কৌশলবিদ স্টিভ শ্মিটও। তার কথায়, এই হত্যাচেষ্টার রাজনৈতিক পরিণতি হবে অপরিসীম। এটি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উপকৃত করবে, যিনি রুজভেল্টের মতো ঠিক একইভাবে গুলি খাওয়ার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন।
বাড়বে জনসমর্থনব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের মতে, ইতিহাস বলছে, শনিবারের ঘটনায় ট্রাম্পের জনসমর্থন অবশ্যই বাড়বে। রোনাল্ড রিগ্যান গুলিতে আহত হওয়ার পর তার জনসমর্থন একলাফে আট শতাংশ পয়েন্ট বেড়ে গিয়েছিল। একই ঘটনা ঘটতে পারে ট্রাম্পের ক্ষেত্রেও।
একই কথা বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এখনই প্রতিদ্বন্দ্বী বাইডেনের চেয়ে জনসমর্থনে চার শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী দিনগুলোতে এই ব্যবধান আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
ভ্যানটেজ পয়েন্ট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার নিক ফেরেস বলেছেন, এবারের নির্বাচনে ভূমিধস জয় দেখা যেতে পারে। এই ঘটনায় (ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টা) সম্ভবত অনিশ্চয়তা কমবে।
কেএএ/