দেশজুড়ে

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ

প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ধনকুণ্ডি শাহানাজ-সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছয়টি পদের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

Advertisement

নিয়োগ কমিটির সদস্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তিনি এই কাজটি করেন বলে অভিযোগ নিয়োগ কমিটির একাধিক সদস্যের।

শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল ৪টায় ওই বিদ্যালয়ের সভাকক্ষে নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা শুরুর পর প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি জানাজানি হলে তা স্থগিত করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শেরপুর উপজেলার সীমাবাড়ী ইউনিয়নের ধনকুণ্ডি শাহানাজ-সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়টির অবস্থান। এই বিদ্যালয়ের ছয়টি শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক পদে ছয়জন, অফিস সহকারী পদে সাতজন, কম্পিউটার ল্যাব সহকারী পদে আটজন, অফিস সহায়ক পদে ছয়জন, নিরাপত্তাকর্মী চারজন ও আয়া পদে তিনজন প্রার্থী আবেদন করেন। ১২ জুলাই তাদের পরীক্ষায় অংশ নিতে চিঠি দেওয়া হয়।

Advertisement

সিংহভাগ চাকরি প্রার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু নিয়োগ কমিটির দুজন সদস্যকে না জানিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম একাই প্রশ্নপত্র তৈরি করেন। এমনকি পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে জানিয়ে দেন। পরীক্ষার সময় বিষয়টি ধরা পড়লে নিয়োগ কমিটির সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়।

পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট নিয়োগ কমিটির সদস্যদের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালকের (ডিজি) প্রতিনিধি বগুড়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন অর রশিদ ও বগুড়া জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম রেজাউল করিম বিব্রতবোধ করেন। বাকি দুজন সদস্য বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গোলাম মাহবুব প্যারিস ও সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এছাড়া চাকরি প্রার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, ছয়টি পদের বিপরীতে চাকরি প্রার্থী কয়েকজনের সঙ্গে গোপন চুক্তি করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। এক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের লেনদেনও হয়। পরীক্ষা শুরুর আগেই কেবল তাদেরই প্রশ্নপত্র জানিয়ে দেন তিনি। কিন্তু ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় তার সব পরিকল্পনাই ভেস্তে যায়।

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে স্থানীয়রা বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা উচিত। প্রকৃত দোষীকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

Advertisement

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে ধনকুণ্ডি শাহানাজ সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি গোলাম মাহবুব প্যারিস প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ায় নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টি স্বীকার করেন।

তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র তৈরির ক্ষেত্রে নিয়োগ কমিটির সব সদস্যকে জানানো এবং সই নেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু এখানে তা করা হয়নি। বরং মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একাই সেটি করেছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে পরীক্ষা শুরুর আগেই পছন্দের প্রার্থীকে প্রশ্নপত্র জানিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে প্রশ্নপত্র তৈরির সময় দুজন সদস্যকে না জানানোর কথা স্বীকার করেন।

জেডএইচ/জিকেএস